সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কুচক্রীরা সংখ্যালঘুকে না চিনেই নির্যাতনের শিকার অন্য জাতিগোষ্ঠী

নজরুল ইসলাম তোফা: প্রত্যেকটি গ্রাম এবং শহর এক অদৃশ্য দাগেই যেন ভাগ হয়েছে। তা হলো, হিন্দু আর মুসলিম। হিন্দুরা যেন মনে করছে মুসলমানের জন বিস্ফোরণ আছে, তাদেরইসলাম ধর্মেই রয়েছে গোঁড়ামি। আবার এই দেশের মুসলমান ধর্মাবলম্বীরা মনে করছে, হিন্দু ধর্মালম্বীর মনোবৃত্তি খুব ভালো তা নয় তারাই এমন দেশটাকে ধ্বংস করবে। অন্যদিকে মুসলিমরা মনে করে সংখ্যা লঘুদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা যাবেনা। হিন্দুদেরকে ছেড়ে কথা বলা যাবেনা। তাদের নিরাপত্তাকে বিঘ্ন ঘটিয়েই 'ইসলাম' প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। তারাতো সংখ্যালঘু। এমন এ পরিস্তিতি প্রায় এক দশক ধরেই যেন চলছে এ বাংলায় অর্থাৎ বাংলাদেশে। কিন্তু হিন্দুদের দোষটা কোথায়? কেউ কেউ আবার বলে থাকে তারা 'সংখ্যালঘু' সম্প্রদায়। তাইকি তারা নির্যাতিত হয়, তাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ভাংচুর সহ দাঙ্গার পরে দাঙ্গা বাধে। চোখের বদলেই চোখ উপড়ে নেওয়া হয়। খুনের বদলে কি তারা খুন হয়। আমার জানা নেই, কিন্তু জানা আছে তাদেরকে "সংখ্যালঘু" বলা হয়। আসলেই কি তারা 'সংখ্যালঘু' না অন্য জাতি।
জানা দরকার, এই আলোচনার মুল বিষয়টি হচ্ছে সংখ্যালঘু। আন্তর্জাতিক আলোচনায় সর্ব সম্মতভাবেই সংখ্যালঘু কারা তার সংজ্ঞা সঠিক ভাবে আজও মিলেনি, তবুও জাতি সংঘের সাধারণ অধিবেশনেরসর্ব বৃহৎ এক আলোচনায় অর্থাৎ ১৮ ডিসেম্বর ১৯৯২ সালের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ৪৭/১৩৫ সিদ্ধান্ত মোতাবেক গৃহীত হয় জাতি সংঘে, সংখ্যালঘু ঘোষণা পত্রের ধারা ১ অনুযায়ী জাতিগত ভাবেই যেন নৃতাত্ত্বিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও ভাষাগত ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীদের সংখ্যা লঘু হিসেবে ধরা হয়েছে।এই সংখ্যা লঘুদের প্রতি বৈষম্য প্রতিরোধ বা তাদের মানবাধিকার সুরক্ষা সংক্রান্তের জন্য জাতি সংঘের সাবকমিশনের একটি বিশেষ প্রতিবেদক ফ্রান্সেস্কো ক্যাপোটোর্টি ১৯৭৭ সালেই সংখ্যালঘুর সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছিল- সংখ্যালঘু বলতে সেই সম্প্রদায়কেই বুঝায় যারা সংখ্যাতাত্বিক দিক দিয়েই একটি রাষ্ট্রের ক্ষুদ্র জনসংখ্যা, আর নাকি ন্যূনতম আধিপত্য এবং অবস্থানও আছে, আর যারাই জাতিগত ভাবে এমন একটি নৃতাত্বিক, ধর্মীয় এবং ভাষাগত বৈশিষ্ট্য ধারণ করে, যা বৃহৎ জনসাধারণের কাছেই পার্থক্য নির্দেশ করে। সারা বিশ্বের সকল দেশে জাতিগত, নৃতাত্ত্বিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও ভাষাগত এমন এই"সংখ্যালঘু" সম্প্রদায়ের বসবাসের মাধ্যমেই সমাজকে নান্দনিক বৈচিত্র্যময়ও করেছে। এ সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিচিত্র পরিস্থিতিতে বসবাস করলেও তারা সাধারণ ভাবেই প্রায়শ বহুবিধ বৈষম্যের শিকার বা তারা নির্যাতনের কবলে পড়ছে। তাদেরকে 'প্রান্তিক অবস্থান' থেকেও একবারে সমাজের বাহিরে ঠেলে দিচ্ছে। লিখতে বা পড়তে কম জানা জাতিরা সীমাহীন নির্যাতন কিংবা বঞ্চনার শিকার হচ্ছে। তারা নিজ দেশেও বাস করে অনাহূত পরবাসীর মতো জীবনযাপন করছে। অথচ এরাই সারাবিশ্বের মানব পরিবারের অংশীদার এবং তারা নিজ নিজ দেশ গঠনে, দেশের উন্নয়নে কিংবা সামাজিক, সাংস্কৃতিক বিকাশে তাদের বহু অবদান আছে। বাংলাদেশেও এই জনগণ স্বাধীনতা যুদ্ধে ও দেশ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা ও কার্যক্রম রেখেছে।কিন্তু বহু পরিসংখ্যানে আবার উঠে এসেছে তাহলো সমগ্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি অন্যায়, অবিচার, নিপীড়ন, উৎপীড়ন কিংবা নানান প্রকার অমানবিক অত্যাচারেই তাদের অস্তিত্ব আজ হুমকির সম্মুখীন হয়ে যাচ্ছে।
এই অবস্থাতেই এমন সংখ্যালঘু জনগণকে সংহতি বা তাদের অধিকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা 'সকল জাতির' কাম্য হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা না করে এমন এই সংখ্যালঘুর পাশা পাশি হিন্দুদেরকে সংখ্যালঘু বানিয়ে ফেলছে।হিন্দুসম্প্রদা­য়ের লোকদের উদ্দেশ্য করেই যেন গুনী ব্যক্তিরা বলেছে 'সংখ্যালঘু' শব্দটিতে কষ্ট পাবেন না তা ভুলে যান। যে দেশে আমরা-আপনারা জন্মগ্রহণ করছি। যেদেশের আলো-বাতাস গ্রহণ করে আমরা বড় হয়েছি। সে দেশেই সংখ্যালঘু এবং সংখ্যা গরিষ্ট কি? জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে আমরা সবাই মানুষ। সুতরাং সংখ্যা লঘু নয়। কারণ আমাদের হীনমন্যতা সামনে চলার পথকে কিংবা বাংলাদেশের উন্নয়কেই বাধাগ্রস্থ করে।

খুব পরিকল্পিতভাবে সংংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন হচ্ছে। তারাতো সংখ্যালঘুই চিনে না। আসলে জাতিসংঘের মৌলিক নীতিটা হচ্ছে: জাতি, বর্ণ, ভাষা-লিঙ্গ লঘুত্বের কারণে কারোর প্রতি বৈষম্য মুলক আচরণ কখনোই করা যাবে না। তাই বলতেই হয় এমন মানবাধিকারের মূল স্তম্ভ এবং সংখ্যালঘুর আইনগত সুরক্ষার মূলমন্ত্র বৈষম্যহীনতা বা সমতার নীতি, যা কিনা সকল সংখ্যা লঘু জাতির জন্যই যেন আন্তর্জাতিক চুক্তির ভিত্তিতে সবাই একমত হয়েছে। আন্তর্জাতিক চুক্তি জাতি, বর্ণ, ধর্ম, ভাষা, জাতীয়তা এবং জাতি নির্বিশেষে সবার জন্যে মানবাধিকার বা স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান সহ বৈষম্যকেও নিষিদ্ধ করা আছে। এই বৈষম্য হীনতা কিংবা সমতার নীতি প্রয়োগের মাধ্যমেই সংখ্যা লঘু সম্প্রদায়ের নাগরিক জীবনে সিদ্ধান্ত গ্রহনে কার্যকর অংশগ্রহণসহ সকল মানবাধিকার নিশ্চিত করাও সম্ভব হবে। নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তির ২৭ ধারা এবং আন্তর্জাতিক শিশুসনদের ৩০ ধারায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়েরসুরক্ষার কথাও বলা হয়েছে। তবে আবার জাতিগত, নৃতাত্ত্বিক,ধর্মীয় ও ভাষাগত সংখ্যালঘু অধিকার বিষয়ক- "জাতিসংঘের ঘোষণা পত্রে সংখ্যালঘুদের অধিকার সংক্রান্ত কিছু মানদন্ড নির্ণয় করেছে। যা সংশিষ্ট রাষ্ট্রকেই যেন সংখ্যালঘুর অধিকার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন এবং পদক্ষেপ গ্রহনের 'গাইডলাইন প্রদান' করেছে। সর্বোপরি 'আন্তর্জাতিক চুক্তি সমূহের অধীনে' প্রদত্ত রাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি বা সংখ্যা লঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরা এবং প্রতিনিধি জাতিসংঘের মানবাধিকার মনিটরিং দল এই কার্যক্রমকে প্রভাবিত করার মাধ্যমে তাদের অধিকার বা সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্যই কার্যক্রমে অংশ গ্রহণ করে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে বা তারা সমাজের অন্য বৃহৎ জাতিগোষ্ঠীর মতোই যেন জীবন যাপন করতে পারে এমন কথাটিও অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।

জানা দরকার আসলে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু কারা। বাংলাদেশে কমপক্ষে ৪৫ টি সংখ্যা লঘু জাতিসত্তার দুটি পৃথক ভৌগলক পরিবেশেই তাদের বসবাস। এ দুটি ভৌগলক পরিবেশের মধ্যে একটি হলো পার্বত্য চট্টগ্রাম (রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি), আর একটি উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা সমূহ। এদের মধ্যেই মধুপুরের গড়াঞ্চল বিশেষ বৈশিষ্ট্য মন্ডিত। এ দেশের সংখ্যালঘুরাই হচ্ছে:- গারো, খিয়াং, ম্রো, বন, চাকমা, চাক, পাংখু, লুসাই, মারমা, ত্রিপুরা, রাখাইন, তঞ্চঙ্গা, খাশিয়া, মণি পুরি, সাঁওতাল, রুজুয়াড়, মন্ডা পাহাড়িয়া, আসাম(অহমিয়া), মুসহর, সমাহাসী, সিং, বেদিয়া, মুরিয়ার, কর্মকার, মাহাতো, উঁরাও, খারিয়া,পাহান, কোচ, কাজবশী, হাজং, ডালু, ক্ষত্রিয়, গোর্সা, কন্দিকোল, চমনি, তুরি, পাত্র, রাই, মালো, ঘুনী, খন্ড, বানই, রাজবংশী। এই গুলোই এ দেশের 'সংখ্যালখু' জাতি, তাদের বহু দিনের দাবি তাহচ্ছে সাংবিধানিক স্বীকৃতি। তাদের সঠিক জীবন যাপনের অধিকারও এই 'বাংলার জমিনে' প্রয়োজন রয়েছে। ভূমি কিংবা অরন্যের উপর অধিকার। নিজস্ব সম্পদ অর্থাৎ ধন সম্পদের উপর অধিকার। কিন্তু তারা আজঅবধিও তা হাসিল করতে পারছে না। পক্ষান্তরে বাংলাদেশে তাদের সহিত হিন্দু, বৌদ্ধ বা খ্রিষ্টান জাতিগোষ্ঠীরও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এদেশের ধর্মীয় বেড়াজাল ও জাতিগতভাবে তাদের সংখ্যালঘু মনে করেই যেন নির্যাতিত হচ্ছে। বিশ্ব জুড়ে নির্যাতন বন্ধসহ অন্যান্য অমানবিক নিষ্ঠুরতা এবং মর্যাদাহানিকর আচরণ ও শাস্তির বিরূদ্ধেই ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে জাতিসংঘের এক আলোচনায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেই তা কার্যকর করে।

কিন্তু এমন বাংলাদেশে তা কার্যকর হলে 'সংখ্যালঘু' মনে করে তাদের উপর নির্যাতন করবার খুব একটা সাহস পেতোনা। সর্বশেষ কথা হলো মানবাধিকারের আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ফেলে যদি সংখ্যা লঘুদেরকে নিয়েই উন্নয়নের ভাবনার সৃষ্টি হয় বা তার প্রয়োগের মাধ্যমেই দেশীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ভুক্ত ব্যক্তিদের নাগরিক জীবনের প্রতিটি স্তরে অন্তর্ভূক্তি করে এবং কার্যকর অংশগ্রহনের মাধ্যমে তাদের নির্যাতন করা থেকে বেড়িয়ে এসে মুক্ত চিন্তা করতে পারলেই যেন বাংলাদেশের জনগণ একটি বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক, মানবাধিকার ভিত্তিক উন্নত দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখতে পারবে বা দেখাতে পারে।

লেখক:নজরুল ইসলাম তোফা, টিভি ও মঞ্চঅভিনেতা, চিত্রশিল্পী, সাংবাদিক, কলামিষ্ট এবং প্রভাষক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

৫২’র ভাষা শহীদদের জীবনী : রফিক, সালাম, জব্বার, বরকত, শফিউর | আমাদের শিল্পসাহিত্য

শহীদ রফিক উদ্দিন আহমদ শহীদ রফিক উদ্দিন আহমদ এর জন্ম ১৯২৬ সালের ৩০ অক্টোবর। গ্রামের নাম-পারিল (বতর্মানে যার নামকরন করা হয়েছে রফিকনগর), থানা- সিংগাইর, জেলা- মানিকগঞ্জ। তার পিতার নাম- আব্দুল লতিফ, মাতার নাম- রাফিজা খাতুন। ৫ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে রফিক উদ্দিন আহমদ ছিলেন ভাইদের মধ্যে সবার বড়। তিনি মানিকগঞ্জ বায়রা কলেজ থেকে ১৯৪৯ সালে ম্যাট্রিক পাশ করেন। মানিকগঞ্জ দেবেন্দ্রনাথ কলেজে আই কম পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। কলেজের পাঠ ত্যাগ করে ঢাকায় এসে পিতার সঙ্গে প্রেস পরিচালনায় যোগ দেন। ২১শে ফেব্রুয়ারীতে শাসকগোষ্ঠীর জারীকৃত ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে যে বিক্ষোভ মিছিল হয় সেখানে তিনি অংশগ্রহন করেন।পুলিশের বেদম লাঠিচার্জ ও কাদানে গ্যাসের কারনে অন্যান্যদের সাথে তিনিও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ছেড়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেলে আশ্রয়গ্রহন করতে যান। এ সময়ে পুলিশের একটু গুলী সরাসরি তার মাথায় আঘাত হানে ও তিনি সাথে সাথেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। সম্ভবত ২১শে ফেব্রুয়ারীর প্রথম শহীদ হওয়ার মর্যাদা রফিক উদ্দিন আহমদই লাভ করেন। তাকে আজিমপুর গোরস্থানে দাফন করা হয়। তবে দুঃখজনকভাবে পরবর্তীতে তার কবর চিহ্নিত করা সম্ভব হয় নি। শহীদ আব্দ...

বিশিষ্ট ছড়াকার নূরুজ্জামান ফিরোজ'র জন্মদিন আজ | আমাদের শিল্পসাহিত্য

নূরুজ্জামান ফিরোজ একাধারে ছড়াকার, গীতিকার, সাংবাদিক, গ্রাফিক ডিজাইনার, সম্পাদক, সংগঠক, সৃজনশীল আয়োজক এবং মানবিক ব্যাক্তি। তিনি ১৯৬৯ সালের ১৮ জুলাই খুলনা শহরের খালিশপুরে জন্ম গ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকার উত্তরা ৬নং সেক্টরে বসবাস করছেন। বাংলাদেশের বিখ্যাত বিজ্ঞাপনী সংস্থা  " এ্যাডোরা লিঃ "  ও আমেরিকান প্রি - প্রেসকোম্পানি  " কালার সেন্টার বাংলাদেশ ইনক্ " এ গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।  বর্তমানে বিখ্যাত গ্রুপ  অব কোম্পানি  " ইনভাইট গ্রুপ লিঃ " এর চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত আছেন।   " ঢাকা ডিজিটাল স্কুল " প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে কোমলমতি শিশুদেরকে ডিজিটাল বই দিয়ে পড়ালেখার এক নতুনধারা উদ্ভাবন করেন তিনি।  সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে ২০০২ সালে ঢাকার উত্তরায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য প্রতিষ্ঠা করেন  " ইউরেকা স্কুল '' । যা পথশিশুদের জন্য প্রতিষ্ঠিত সবচেয়ে পুরাতন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ।  এই স্কুলে শিক্ষা নিয়ে আনেক শিশু ইতোমধ্যেই কলেজের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রেখেছে ।  এ ছাড়াও দেশের সর্বস্তরের শিশু - কিশোরদের জন্য তিনি প্রতিষ্ঠা ...

কবিতার পাণ্ডুলিপি তৈরি করার সেরা কৌশল : জেনে নিন এক নজরে

কবিতা লেখা অনেকেরই শখ। তবে সেই কবিতাগুলো যদি বই হিসেবে প্রকাশ করতে চান, তাহলে প্রয়োজন পাণ্ডুলিপি। অনেকেই কবিতা লিখে রাখেন খাতায়, মোবাইলের নোটে বা ফেসবুকে পোস্ট আকারে। কিন্তু সেগুলো পাণ্ডুলিপিতে রূপ না দেওয়ায় কখনো বই হয়ে ওঠে না। আজ আমরা জানব—   👉 কবিতার পাণ্ডুলিপি কী? 👉 কীভাবে কবিতার পাণ্ডুলিপি তৈরি করবেন?  👉 কবিতার পাণ্ডুলিপির আদর্শ কাঠামো কোনটি? 👉 কবিতার পাণ্ডুলিপি আকর্ষণীয় করার জন্য কার্যকর কিছু কৌশল! ক) কবিতার পাণ্ডুলিপি কী? কবিতার পাণ্ডুলিপি হলো বইয়ের জন্য প্রস্তুত একটি গোছানো খসড়া। এখানে কবিতাগুলো একটি পরিকল্পিত কাঠামো অনুযায়ী সাজানো থাকে, যেন প্রকাশক তা সহজেই বই হিসেবে প্রকাশ করতে পারেন। কবিতার পাণ্ডুলিপিতে থাকে: ভূমিকা বা কবির কথা, উৎসর্গ বা কৃতজ্ঞতা, কবিতাগুলোর ধারাবাহিক ও বিষয়ভিত্তিক বিন্যাস, প্রতিটি কবিতার নির্ভুল নাম ও বানান, শেষে কবির সংক্ষিপ্ত জীবনী। খ) কীভাবে কবিতার পাণ্ডুলিপি তৈরি করবেন? নিচে ধাপে ধাপে পাণ্ডুলিপি তৈরির প্রক্রিয়া দেওয়া হলো: 👉 ধাপ ১: কবিতাগুলো সংগ্রহ ও নির্বাচন: আপনার লেখা সব কবিতা একত্রিত করুন। টাইপ করে একটি ডকুমেন্টে নিয়ে আসুন। মানসম্প...

শব্দকথা সাহিত্য পুরস্কার-২০২৫ এর জন্য বই আহ্বান

৩য় বারের মতো শব্দকথা প্রকাশন-এর উদ্যােগে আটটি বিভাগে "শব্দকথা সাহিত্য পুরস্কার-২০২৫" প্রদানের জন্য বই আহ্বান করা হয়েছে।  ✅ বিভাগগুলো হলো: ১। কবিতা ২। উপন্যাস ৩। প্রবন্ধ ও গবেষণা ৪। শিশু-কিশোর সাহিত্য  ৫। সায়েন্স ফিকশন  ৬। ছোটোগল্প  ৭। অনুবাদ সাহিত্য  ৮। আত্মজীবনী, স্মৃতিকথা ও ভ্রমণকাহিনী  ✔️দিনব্যাপী একটি জাকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আটটি বিভাগে নির্বাচিত লেখকগণকে সম্মাননা, ক্রেস্ট, উত্তরীয় এবং সম্মাননাপত্র প্রদান করা হবে। ✔️২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে রচিত মৌলিক গ্রন্থসমূহ প্রতিযোগিতার জন্য বিবেচিত হবে। ✔️প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণেচ্ছুদের বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। ✔বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশিরা এতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। ✔️বই জমা দেওয়ার পর যে কোনো পর্যায়ে অথবা পুরস্কার প্রদানের পর যদি অবগত হওয়া যায় যে, কোনো বই অন্য কোনো বইয়ের অনুকরণ অথবা আংশিক প্রতিরূপে রচিত, সেক্ষেত্রে বইটি বাছাই প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়ার এবং পুরস্কার প্রত্যাহারের অধিকার বিচারকমণ্ডলীর সংরক্ষিত থাকবে। ✔️পুরস্কারের যে কোনো পর্যায়ে বাছাইয়ের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির রচ...

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন নিয়োগ পরীক্ষার পদ্ধতি, যোগ্যতা এবং প্রস্তুতি জেনে নিন এক নজরে

✍️অনেকটা বিসিএসের আদলে নেয়া হয় এই নিয়োগ পরীক্ষাটি। 📌সারাদেশে নিম্ন-মাধ্যমিক, মাধ্যমিক, কলেজ, মাদ্রাসা এবং কারিগরিসহ  প্রায় ৩৬ হাজার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ আবশ্যক।  📌আর সেই লক্ষ্যে ২০০৫ সাল থেকে সরকার কর্তৃক এনটিআরসিএ (NTRCA) বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগের জন্য বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন নিয়োগ পরীক্ষা চালু করেছে। 📌দেশের কোন বেসরকারি বিদ্যালয় বা কলেজে এই নিবন্ধন ছাড়া চাকরীর কোন সুযোগ নেই। তাই শিক্ষকতায় ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা বাধ্যতামূলক দিতেই হবে। ✍️শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার যোগ্যতাঃ ________________________ 📌শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় কলেজ ও স্কুল পর্যায়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে আপনাকে কমপক্ষে স্নাতক পাস হতে হবে। আর স্কুল পর্যায় -২ এর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে আপনাকে কমপক্ষে এইচএসসি পাস হতে হবে। 📌তবে যারা সদ্য পাস করেছে সেসব প্রার্থীরা সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দেওয়া প্রশংসাপত্র, মার্কশিট, প্রবেশপত্রসহ আবেদন করতে পারবেন। 📌নিবন্ধন পরীক্ষায় আবেদনে...

প্রজন্মের জন্য 'চিরকুট' - শাহীদুল আলম | আমাদের শিল্পসাহিত্য

প্রিয়,  দুনিয়ার সকল বাংলা ভাষাভাষী। যাঁরা এই চিরকুট পড়া শুরু করতে যাচ্ছো, যাদের এই লেখা পড়তে কোনো কষ্ট হয়না এমনকি আগামী প্রজন্মের জ্ঞানপিপাসু, অনুসন্ধানী নব তরুণ, যারা মেধা বিকশিত হওয়ার পথে ও ভালোমন্দ বিচার করার সক্ষমতা অর্জন করেছো। যারা সত্যকে জানার জন্য উদগ্রীব থাকে প্রতিনিয়ত, তাদের জানাই সশ্রদ্ধ সালামসহ একরাশ অগ্রিম শুভেচ্ছা ও চিরকুট পড়ার ভুবনে সু-স্বাগতম।  তোমাদের জন্য আমার কিছু কথা ভবিষ্যতের জন্য বলে যেতে চাই, কিছু কথা রেখে যেতে চাই, যে কথাগুলো হবে  তোমাদের জন্য গ্রহণযোগ্য, জীবন চলার পথে শক্তি ও মুক্তি আবার হয়তো  মহাচিন্তার কারণ। তবে জেনে রেখো এটাই সত্য ও বাস্তবতার নিরিখে লেখা অপ্রিয় সত্য বাণীই হবে তোমাদের আগামীর পথচলার, ভবিষ্যৎ গড়ার পথনির্দেশক। যদি এই চিরকুটের কোনো চরণ তোমাদের জীবন চলার পথে এগিয়ে যাওয়ার কারণ কিংবা কাজে এসেছে মনেহয় তাহলেই হবে আমার লিখে যাওয়া চিরকুটের সার্থকতা।  শুরুতে বলতে চাই "চিরকুটটা" সম্পূর্ণ পড়ার মনমানসিকতা ও ধৈর্য ধরে পড়ার চেষ্টা করতে হবে। প্রতিটি লাইন পড়তে হবে দ্রুত পড়তে যেয়ে হয়তো কোনো লাইন বাদ দিয়ে চলে যাবে ফলে মূল বিষয়বস্তু বুঝতে ব...

পাণ্ডুলিপি কী এবং কীভাবে প্রথম বইয়ের পাণ্ডুলিপি তৈরি করবেন?

প্রথম বই প্রকাশ করার স্বপ্ন সব লেখকের মনেই থাকে। কিন্তু সেই স্বপ্নের প্রথম ধাপ হচ্ছে একটি পরিপূর্ণ পাণ্ডুলিপি তৈরি করা। ব্যাপারটি অনেকের কাছে কঠিন ও জটিল মনে হয়। এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি সহজভাবে বুঝতে পারবেন পাণ্ডুলিপি কী, কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ এবং কীভাবে গুছিয়ে তৈরি করবেন আপনার প্রথম বইয়ের পাণ্ডুলিপি।   👉 পাণ্ডুলিপি কী? বই প্রকাশ করার আগে যেটি তৈরি করা হয়, সেটিই পাণ্ডুলিপি। এটি আপনার বইয়ের একটি পূর্ণাঙ্গ খসড়া। এটি হতে পারে হাতে লেখা অথবা টাইপ করা। তবে ডিজিটাল এই যুগে টাইপ করা পাণ্ডুলিপি বেশি গ্রহণযোগ্য। পাণ্ডুলিপিতে বইয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত লেখা থাকে, অধ্যায়/পর্ব/অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সাজানো থাকে, লেখকের ধারণা অনুযায়ী নাম, ভূমিকা, উৎসর্গ, সূচিপত্র ইত্যাদি থাকে। পাণ্ডুলিপিই প্রকাশকের হাতে যায় বই প্রকাশের জন্য। এটি প্রকাশযোগ্য কিনা, তা বিচার হয় এই পাণ্ডুলিপির ভিত্তিতেই।  👉 কীভাবে পাণ্ডুলিপি তৈরি করবেন? প্রথমবারের মতো পাণ্ডুলিপি বানাতে গিয়ে ভয় পাওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু কাজটি একদমই কঠিন নয়, যদি আপনি নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করেন: ১. লক্ষ্য নির্ধারণ করুন (আপনি কী লিখতে চান): প্র...

রহস্য উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি তৈরি করার সেরা কৌশল - জেনে নিন এক নজরে

রহস্য উপন্যাস মানেই পাঠককে একটা অজানা কিছুর পেছনে টেনে নেওয়া। এখানে প্রতিটি চরিত্র সন্দেহভাজন, প্রতিটি ক্লু বিভ্রান্তিকর, আর সমাপ্তি এমন, যা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। আর সেই কাজটি শুরু হয় একটি শক্তিশালী পাণ্ডুলিপি দিয়ে। আজ আমরা জানব— 👉 রহস্য উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি কী 👉 কীভাবে একটি মানসম্পন্ন রহস্য উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি তৈরি করবেন?  👉 আদর্শ রহস্য উপন্যাসের পাণ্ডুলিপির কাঠামো কেমন হওয়া উচিত?  👉 রহস্য উপন্যাসের পাণ্ডুলিপিকে আরও আকর্ষণীয় করার কৌশল! ক) রহস্য উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি কী? রহস্য উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি হলো একটি পূর্ণাঙ্গ, গুছানো ও প্রকাশযোগ্য খসড়া। এখানে একটি রহস্য ধাপে ধাপে উন্মোচিত হয়। এতে কাহিনির সূচনা, ক্লু, সন্দেহভাজন চরিত্র, বিভ্রান্তি, তদন্ত এবং সমাধান—সবকিছু সুনির্দিষ্টভাবে গাঁথা থাকে। পাঠক যেন প্রতিটি পৃষ্ঠা পড়ে একধরনের মানসিক উত্তেজনায় থাকে। খ) কীভাবে একটি মানসম্পন্ন রহস্য উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি তৈরি করবেন? ✅  শুরুতেই রহস্য তৈরি করুন: গল্প শুরুতেই এমন একটি ঘটনার ইঙ্গিত দিন যা পাঠকের কৌতূহল জাগায়। যেমন: সকালবেলা চায়ের কাপের পাশে একটা চিঠি পড়ে ছিল। তাতে লেখা: ‘আমি...

আসছে ইমতিয়াজ, পরাণ, হাবিব, মুস্তাফিজ এর জীবনমুখী গান "পথশিশু"

পথশিশুদের বঞ্চনা-সংগ্রামী মানবেতর জীবন ও অসহনীয় কষ্টের কথা নিয়ে সহকারী নাট্য নির্দেশক ও সংবাদকর্মী ইমতিয়াজ মেহেদী হাসান রচনা করেছেন ‘পথশিশু’ শিরোনামে একটি জীবনমুখী গান। সময়ের আলোচিত সুরকার হাবিব মোস্তফা’র সুরে গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী পরান। মেধাবী সংগীত পরিচালক অণু মোস্তাফিজ’র সংগীত আয়োজনে সম্প্রতি রাজধানীর একটি স্টুডিওতে গানটি ধারণ হয়েছে। গানটি সম্পর্কে গীতিকার ইমতিয়াজ মেহেদী হাসান বলেন, গানটি সমাজ বাস্তবতার করুণ চিত্র। এখানে কল্পনার কোন স্থান নেই। বিত্তবানরা শখের বসে ইচ্ছেমত খরচ করছে কিন্তু তাদের পাশেই ছোট্ট পথশিশুরা জীবনের ন্যূনতম চাহিদাটুকুও পূরণ করতে পারছে না। বঞ্চনার এই দৃশ্যটুকু একজন মানুষ হিসেবে আমার বিবেক স্পর্শ করেছে। সেই বেদনা থেকেই গানটি রচনা করি। পরে সুহৃদ হাবিব মোস্তফা’র সাথে আইডিয়াটা বিনিময় করায় তিনি সুন্দর একটি আয়োজন করে আমাকে চমকে দিলেন। পরান চমৎকার গেয়েছেন আর অণু মোস্তাফিজ ভাইয়ের কম্পোজিশন গানটিকে অন্য মাত্রায় উন্নীত করেছে। আশাকরি শ্রোতারা গানটিকে ভালভাবে গ্রহণ করবেন। সুরকার হাবিব মোস্তফা বলেন, মানব জীবনের চলমান দুঃখসুখের দু...

শীঘ্রই শুরু হবে ‘শেষ আলো'র যাত্রা

শিল্পসাহিত্য ও সংবাদের ‘শেষ আলো’ ...‘শেষটা সুন্দর হোক’ স্লোগানে আসছে শীঘ্রই ‘শেষ আলো’ ম্যাগাজিন পত্রিকা সাইট। ম্যাগাজিন পত্রিকাটির সাইটে নিয়মিত শিল্পসাহিত্য বিষয়ক প্রতিবেদন এবং যাচাই-বাছাইকৃত সংবাদের কালেকশন থাকবে। আশাকরি, রুচিশীল পাঠক ও দর্শকদের একটি নির্ভরযোগ্য সাইট হবে।