সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সৃষ্টিকর্তার সেই মানুষ আর এ মানুষ, আসল মানুষ ক'জনা | আমাদের শিল্পসাহিত্য

নজরুল ইসলাম তোফা:: অনেক ধর্মাবলম্বীর মানব মানবীরাই প্রথমে পৃথিবীতে এসেই শুরু করলেন ভাল-মন্দের খেল। কেউ কেউ আবার আসারও আগেই ঘটিয়েছিল ঘটনা। তবে সেই মানব-মানবী পথ ধরে আজকের শাখা প্রশাখায় বা বিভিন্ন ধর্ম মতেই এ মানুষ, তারা নিজেরা যেমন অন্যকে ঠিক তেমনি মনে করে। মানুষ হিসেবে যে ভালো, সে অন্য মানুষের মন্দ দিকটি ঢেকে রেখে ভালো দিকটি তুলে ধরে। আর যে মানুষ নিজে মন্দ, সে অন্যের ভালো দিকটির পরিবর্তে মন্দ দিকটিই তুলে ধরে। মুলত এভাবেই মানুষ তার প্রকৃত রূপটি প্রকাশ করে।জীবনযাপনে সর্বক্ষেত্রেই এক একটা সময়ের অনেক গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। সময়ের সঙ্গে যেমন বদলে যায় সব কিছু, ঠিক তেমনি অনেক বেশিই পরিবর্তন হয়, যেমন: দৃঢ় হয় মানুষের ভাবনা, বিশ্বাস কিংবা উদ্যম। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর কিংবা দশকের পর দশক এ মানুষরাই অতিক্রান্ত করে অনেক কিছু। ঘুষ-দুর্নীতি, অন্যায়-অবিচার, উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য, জীবনের চাহিদায় অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান­, শিক্ষান্তে কর্মসংস্থান, প্রয়োজনে নানাবিধ আইন কানুন কিংবা তার প্রয়োগ এবং অপ্রয়োগ প্রায় সব গুলোই প্রত্যক্ষ করছে মানুষ। সেই মানুষ গুলো ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় দেখাযায় যে, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠী কিংবা ধর্মাবলম্বীর মানুষের মধ্যেই কম হোক বা বেশিই হোক সবকিছুতেই যেন অবক্ষয়ের মাত্রাটা লক্ষ করা যায়। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মাঝেই কিছু মানুষ নিরাবতায় থাকে আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রকট অস্থিরতা তাদের মাঝে বিরাজ করে। যুগে যুগে এই অস্থিরতা সৃষ্টিকারীরাই যেন উপঢৌকন প্রাপ্তির জন্য অথবা লোভ-লালসার আশায় হয়তো এমন কাজ গুলো করে আসছে। সত্তর হাজার বছর আগেও মানুষ ছিল প্রাণী জগতের মধ্যে বন্যপ্রাণীর মতো আবারও সেই মানুষের মতোই মানুষ হিংস্র হয়েই উঠছে। দেখা যায়, অধিকাংশ মানুষ, কবি সাহিত্যিক, সাহিত্য সংস্কৃতি, ছাত্র শিক্ষক, মওলানা মুন্সী, কর্মকর্তা কর্মচারী, গ্রগতিশীল সুশীল নাম ধারী মানুষ, অনেক বড় বড় গডফাদার বা দুর্নীতিবাজ, রাজনীতিবিদ কিংবা আমলারাই যেন তার মধ্যেই পড়ে। তাঁরা 'ধরি মাছ না ছুঁই পানি' এমন ভাব দেখিয়ে চলে, আবার সুযোগ পেলেই অন্যকে অকপটে দোষ দেওয়ারও প্রবণতা সৃষ্টি করে।বন্য মানুষের বিচরণ ও সীমাবদ্ধ ছিল কেবল মাত্রই যেন আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যে আর এখন সেই সব মানুষের মতো মানুষহিংস্র হয়ে উঠছে সারা বিশ্বে। অবশ্য সেই সময়ের পরে ধীরে ধীরে সমস্ত পৃথিবীর শাসক হয়েছিল। কিন্তু এখনকার মানুষ নিজেই ঈশ্বর হয়ে উঠার দ্বারপ্রান্তে, চিরজাগ্রত তারুণ্যকে কেবল গ্রাসই করতে চাচ্ছে না, সৃষ্টি কিংবা ধ্বংসের মতো স্বগীর্য় ক্ষমতা গুলোকেও নিজের আয়ত্তে আনারজন্যই বদ্ধপরিকর। জানা যায় যে, প্রাণী কুলের মধ্যে এমন মানুষরাই ধীরে ধীরে সামাজিক জীব হয়ে উঠে, পৃথিবীর শুরুতেএই মানুষ এতোটা চতুরও ছিল না। তারা সকল প্রাণীর চেয়েও তীক্ষ্ম এবং গভীর বুদ্ধি সম্পন্ন ছিল তা স্বীকার করতেই হয়। জীবতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে এমন মানুষেরাই পৃথিবীতে প্রাণী কুলের মধ্যেই যেন বংশ বিকাশে কৌশলে চৌকশ ছিল, বলা যায়, প্রাণী কুলের একটি পরিপূর্ণ রূপ এই মানুষ। সুজন-কূজন, ভালো-মন্দ সব ধরণের মানুষকে নিয়েই তাদের হয়ে উঠে মানব সংসার। এমন প্রাণী জগতের একমাত্র মানুষই বিবেক সম্পন্ন আর আস্তে আস্ত কথা বলতেও সমর্থ হয়।কিন্তু এই পৃথিবীতে তাঁরা প্রথমেই বনে জঙ্গলে, গাছের নিচে কিংবা বিভিন্ন গুহায় বসবাস করে আসছিল। সেই মানুষ ধীরে ধীরেই পছন্দ মতো নিজস্ব পরিবার গঠন করে, গোষ্ঠী বা সামাজিকতা তৈরি করে ফেলে। চৌকশ বুদ্ধি দিয়েই তাঁরা সেই আদি কাল থেকেই নানান কর্ম করে আসছে। তখনকার যুগকে এখনকারমানুষরা বলছেন, তখন ছিল বর্বর বা অসভ্য যুগ। কিন্তু জানা যায় যে, সেখান থেকেই তো এমন মানুষের বংশ বিস্তারের সৃষ্টি। এখনও কি সেই মানুষই ফিরে আসছে। এই সময়ের মানুষেরঅর্জিত বিপুল ক্ষমতা মানুষের জন্য নিয়ে এসেছে কান্না-হাহাকার এবং ধ্বংসযজ্ঞ। মানুষের নিজের মানসিকতার উন্নতি যেন হয়ই নি, বরং মানুষের কারণেই দিনে দিনে বাড়ছে মানুষের মৃত্যু এবং অন্যান্য প্রাণীর জীবন ক্রমাগত দুর্বিষহ হয়ে উঠছে।

আরো জানা দরকার আছে এমন মানুষ সম্পর্কে, সৃষ্টি কর্তা মনের মাধুরী দিয়েই যেন আদমকে সৃষ্টি করে তাঁর সঙ্গী হিসাবে হাওয়াকে সৃষ্টি করে দিলেন। এই মানব আর মানবী ভুল করেই পৃথিবীতে এলেন। কিন্তু কি ভুলে তাঁরা এলেন সে দিকে আর যেতেও চাই না। বলতে চাই যে, মানব জাতির পিতা আদম (আ:) ও মাতা হাওয়া (আ:) থেকেই তো মুসলমানরা বলছেন মানব জাতির সৃষ্টি। আসলে এ আলোচনায় বিস্তারিত জানানো না গেলেও বলতেই হয়, হযরত আদম (আ:) ও বিবি হাওয়া (আ:) উভয়ে জান্নাতের মতো সুুুুসজ্জিত এক বাাগানে বসবাস করে ছিল। আর সেখানেই নাকি পিছু লাগলো এক 'ইবলিশ' নামক পাপিষ্ঠ শয়তান। তাঁর প্ররোচনায় পড়ে বা ভুল করেই এই পৃৃথিবীতে উভয়ে এলেন। তাদের জোড়ায় জোড়ায় সন্তান জন্মের শুরুতেই হযরত আদম ও হাওয়া (আ:) পৃথিবীতে প্রথম প্রজনন ও বংশ বিস্তারে বিবি হাওয়া (আ:) যমজ একটি পুত্র ও একটি কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহণ করেন। তখন ভাই বোন ছাড়া হযরত আদম (আ:) এর আর কোন সন্তান ছিল না। পরে আরো একটি পুত্র ও কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহণ করান। এখন বংশ বিস্তারের জন্য আল্লাহ তাআলার নির্দেশেই প্রয়োজনের তাগিদে একটি নির্দেশ জারি করলেন যে, ভাই-বোন পরস্পর বিবাহ করতে পারবে না সেহেতু একই গর্ভ থেকে যে যমজ পুত্র ও কন্যা সন্তান তাঁরা পরস্পর সহোদর ভাই বোন বলেই গন্য হবে আর পরবর্তী গর্ভ হতে জন্মগ্রহণকারী পুত্রের জন্যে সম্পর্ক প্রথম গর্ভ হতে জন্মগ্রহণকারী কন্যা সহোদরা বোন হিসেবেই নাকি তাঁরা গন্য হবে না। তাদের মধ্যে পরস্পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়াটা ছিল বৈধ। কিন্তু ঘটনাচক্রে কাবিলের সহজাত সহোদরাবোনটি ছিল পরমা সুুুন্দরী এবং হাবিলের সহজাত বোনটি ছিল কুশ্রী এবং কদাকার। বিবাহের সময় হলে শর'য়ী নিয়মানুযায়ী হাবিলের সহজাত কুুশ্রী বোন কাবিলের ভাগে পড়লো। এতেই কাবিল অসন্তুষ্ট হয়ে হাবিলের শত্রু হয়ে গেল। কৌশলী এই জেদ আমার সহজাত বোনকেই আমি কাছে পেতে চাই এবং তাকে আমিই বিবাহ করবো। আর হযরত আদম (আ:) তাঁর সৃষ্টি কর্তা কিংবা শরীয়তের আইন অনুযায়ী কাবিলের আবদার প্রত্যাখান করলেন। এখানেই ঘটনার শেষ হবার নয়, একপর্যায়ে ঘটিয়ে ফেলে কাবিল এক ভয়ানক মৃত্যু, মানে কাবিলের হাতেই হয়ে যায় হাবিলের মৃত্যু। কারণটা হলো তাঁদের পছন্দ অপছন্দ নিয়ে। বলাই যায় যে, কাবিলের নারীর রূপ সৌন্দর্যের প্রতি ছিল লোভ লালসা। এই আলোচনায় তাদের ঘটনাটিকে অনেক দীর্ঘ না করেই বলা প্রয়োজন যে, মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের কাছে এই ইতিহাসের শিক্ষা দিয়ে মন্দ মানুষ আর ভালো মানুষকে বুঝতেই একটি উদাহরণ। কিন্তু অন্যান্য জাতি ও গোষ্ঠীর মানুষরা এমন এই ইসলাম ধর্মের আলোকে বিশ্বাস করবেন।

আসলেই এখানে মানব জাতির বিশ্বাস অবিশ্বাসের একটি তর্ক বিতর্ক, মানা না মানার এক বৃহৎ সংঘাত। কারণটা এই খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মুখেই শুনা যায় যে, তাদের আদি মানব মানবী "এডাম ও ইভ"। কিন্তু মুসলিমরা বলছেন আদম (আ:) কেই "এডাম" বলছেন। আর হাওয়া (আ:) কে "ইভ" নামে তাঁরা স্মরণকরছেন। এখানেই এই মানব জাতির তর্কের শেষ হবার নয়। হিন্দুধর্মাবলম্বীরাও বলছেন, প্রথম আদি সৃষ্টি মানব "মহর্ষি মনু" আর প্রথম মানবী হচ্ছে "শতরূপা"। তারাও বিশ্বাস করেন,এক পুরুষ আর এক নারীর মাধ্যমেই মানব জাতির সৃষ্টি। আসলেইকি হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ কিংবা মুসলমান দিয়েই এ আলোচনা শেষ করা সম্ভব। হয়তো বা সম্ভব নয়? মৌলিক চারটি ধর্ম দিয়ে আলোচনাকে দাঁড় করানোতে গিয়েই চলে আসছে আরো ধর্ম। তাঁদের ধর্মের মধ্যেও ছিল সংঘাত, ধর্ষণ, মৃত্যুর মতো অজস্র কাহিনী। সুতরাং বর্তমানের এই মানুষ কি পিছনের দিকেই ফিরে যাচ্ছে। একটু পরিস্কার আলোচনা না করলেই নয়, এই মানুষ সৃষ্টির রহস্য বা ধর্ম সম্পর্কে পরিপূর্ণ ভাবে না জানতেও এক সময় জেনে ছিলাম যে, শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হযরত মুহম্মদ (সা:)। আরো ধীরে ধীরে আরও জানা যায় যে, অন্যান্য ধর্মেরও প্রবর্তকও আছে। খ্রিষ্ট ধর্মের প্রবর্তক "যীশু খ্রিষ্ট বা ঈসা নবী", বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক "গৌতম বুদ্ধ", তাঁর আগেও ইহুদি ধর্মের প্রবর্তক "মুসা"। আবার হিন্দু ধর্মের প্রবর্তক ছিল"ভগবান শ্রীকৃষ্ণ"। এই প্রবর্তকের হাত ধরেই ধর্মের শৃঙ্খলা বা মানুষ জীবন যাপনের পূর্ণ বিধান প্রতিষ্ঠিত হয়ে ছিল। তখন ছিল অসভ্য বা বর্বর যুগ থেকে বাহির হয়ে সভ্য যুগে পদার্পণ করার জন্যেই মানুষের আপ্রাণ চেষ্টা। কিন্তু বর্তমানের মতো তখন তো কোনো শক্তিশালী আইনও ছিলো না। এই সকল প্রবর্তক ছাড়া তখন সেই রকম দুর্নীতিবাজ বা অন্যায়কারীর কোনো বড় গোষ্ঠী কিংবা কোনো বড় অসাধু নেতাও ছিলো না। ছিল শুধু মাত্রই ধর্মের প্রবর্তক আর তাদের কথাতেই নিজস্ব গোষ্ঠী বা সমাজে যথারীতি চলতো ঈশ্বর প্রদত্ত বা সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত একমাত্র আইন। আস্তে আস্তেই এমন আইনের পাশা পাশিই তাদের গভীর সম্পর্কের মধ্যেই যেন সমগ্র পৃথিবীর মানুষজন ব্যক্তিগত ধন-সম্পদেরচাহিদা বাড়াতে শুরু করে। উদ্ভব হওয়া বিভিন্ন 'ফসল' এই মানুষরাই চিহ্নিত করে এবং তা অরো বেশি ফলন ঘটিয়ে খারাপ চাহিদা পূরণ করতেও শুরু করেছিল। মানুষের চিন্তা চেতনার মাত্রা দিনে দিনেই যেন বাড়তে শুরু করেছিল। কিন্তু আজকের এই মানুষ কেন এমন চিন্তা চেতনা থেকে দূরে সরে পড়ছে। শুধুই কি নিজের আমিত্ত্ব বা লোভ লালসাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। পৃথিবী জোড়া অনেক গুলো প্রচন্ড ক্ষমতাবান বা অতৃপ্ত এবং দ্বায়িত্ব জ্ঞানহীন ঈশ্বররূপী মানুষ নিজেরাই জানে না কী যে চায়, তাদের চাওয়ার শেষটাই কোথায়।
জানা যায় যে, এক সময় মানুষ বন্যপ্রাণীকে ব্যবহারে ফসল উৎপাদন ও তাদের খাওয়ার প্রক্রিয়া শিখে নিতো, পাশাপাশিও এই মানুষ জন হারাম হালাল কিংবা তাদেরকে কোনো কোনো ধর্মাবলম্বীরাও যেন নিজ পুজা অর্চনার ভিতরে প্রবেশ ঘটিয়ে আদর্শের দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে। তাদের মৃত্যুও চায় নি। কিন্তু এখন পাষন্ড পিতা কি করেই নিজের সন্তানকে পশুরমতো জবাই করছে। আসলেই ইতিহাসে যা হয়েছিল তাতো স্বয়ং সৃষ্টিকর্তার নির্দেশেই হয়েছিল। এমন পাষন্ড গুলোর কে নির্দেশ দাতা হয়। অতীতে এ মানুষের আচার-আচরণ নির্ধারিত হয়েছিল বিভিন্ন ধর্মীয় অবকাঠামোকে লালন করে। তাদের চিন্তা, আবেগ, ইচ্ছা এবং সামাজিক ও প্রাকৃতিক নিয়ম সম্পর্কে জ্ঞানের স্তরের দ্বারাই। মানুষের সঙ্গে প্রাণী জগতের বিভিন্ন সদস্যদের মূল পার্থক্যটা হলো, মানুষ প্রকৃতিকে নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তন করে ছিল, যা অন্য যেকোনো প্রাণীরা তা পারেনি। মার্কসীয় মতে, মানুষের চেতনা, আধ্যাত্মিকতা এবং বিচিত্র ধরনের শ্রমের হাতিয়ার ব্যবহার এবং বন্যপ্রাণী ব্যবহার করার ক্ষমতা সবকিছুই হলো সামাজিক শ্রমের ফসল। যখন থেকে মানব সভ্যতার সূচনা, তখন থেকেই রয়েছে মানব ধর্ম। সেই ধর্ম আজকের মতো এতপ্রাতিষ্ঠানিকও ছিল না। যা যুগে যুগেই যেন বিকশিত হয়েছে,রূপান্তরিত হয়েছে, পরিবর্ধিত, পরিমার্জিত বা বিলুপ্ত হয়েছে। অনেক ভাঙ্গা গড়ার মধ্য দিয়েই যেন এসেছে বিভিন্ন ধর্ম ও মানুষ। আজও এই পৃথিবীর বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মানুষের জীবন যাপন বা তাদের পরলৌকিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।বর্তমান পৃথিবীতে বিদ্যমান ৪৩০০ ধর্মের বাইরেও একটি ধর্ম রয়েছে যার অনুসারী প্রধান ৪টি ধর্মের মতোই বলা যায়।সেটি হলো ধর্মনিরপেক্ষ বা নাস্তিক মানুষজন, যাদের সংখ্যা ১২০ কোটিরও বেশি। এর বাইরে বিভিন্ন ধর্মের আকার নির্ধারণ করা হয় সেই ধর্মের অনুসারী সংখ্যার বিবেচনায়। মানুষ সৃষ্টিগত ভাবে যেমন রঙ-চেহারায় আকার-আকৃতিতেও বিচিত্র, যেমনটি মন-মানসিকতা, চিন্তা-চেতনা, কাজ-কর্মে এবং ধর্মীয় মতাদর্শেও বিচিত্র। কারো কারো মধ্যে পাশবিকতার প্রাধান্য কারো মধ্যে মানবিকতার প্রাধান্য লক্ষ করা যায়। এককথায় নিষ্পাপ, নিষ্কলুষ, নির্দোষ মানুষ যেমন পাওয়া কঠিন তেমনি প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই কিছু না কিছু সুন্দর বা ভালো দিক রয়েছে। আর তার হয়তো প্রয়োজনও রয়েছে। কারণ, ভালো না থাকলে মন্দ চেনা যেত না। অনুরূপ মন্দ না থাকলেও ভালোত্ব বুঝা যেত না। ভালো-মন্দ আছে বলেইআমরা একটিকে অন্যটিকে সাথে তুলনা করে নিজেকে শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করি, পাশবিকতা পরিহার করে মানবিক বোধ অর্জনের চেষ্টা করি। কিন্তু সমাজে কিছু কিছু মানুষ আছে যাদের কাজই হলো পরচর্চা, পর নিন্দা, পর ছিদ্রোন্বেষণ করা,অন্যের দোষ-ক্রটি খুঁজে বের করা। তারা নিজেরা যেমন মন্দ চরিত্রের অধিকারী অন্যকে তেমনি মন্দ চরিত্রের মনে করাও তাদের কাজ।বর্তমান পৃথিবীতে মানব সভ্যতার জয়জয়কার ঘোষিত হলেও তার মাঝে অনেক দুর্নীতি নামক কীট বাসা বেঁধেছে। শট, অসৎ ও প্রচারমুখী মানুষ আজ নেতৃত্বের আসনে। এ ক্রান্তিকালে মহৎ ও মঙ্গলকামী মানুষেরা নির্বাক, জ্ঞান ও আলোকিত জনও যেন অন্ধ। মানব সভ্যতার ব্যাপক বিকাশ সাধিত হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানুষের মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটছে। ফ্যাসিবাদের উদ্ভবে মানসিক সম্পর্কের অবনতি এবং সততার অভাব দেখা দিয়েছে। বিদগ্ধ মানুষকে এমন অবস্থা ভীষণ ভাবনায় ফেলেছে। মানুষ আজ তার নৈতিকতা ছুঁইয়ে লাজ-লজ্জারও মাথা খেয়েছে। যুদ্ধ-বিগ্রহ, ক্ষুধা, রোগশোকেএকদিকে সাধারণ মানুষরাও কষ্ট পাচ্ছে অন্যদিকে নেতৃত্বাধীন কালো টাকাধারী নেতাদের ঘরে চলছে সুখের উৎসব। বিপন্ন মানুষকে যেন দেখেও দেখে না। মানুষের হৃদয়ে নীতিবোধ ও মমতা যেন লোপ পেয়েছে। যাদের শরীরে চর্মচক্ষু কার্যকর তাদের মনের চোখ অন্ধ হয়ে গেছে। তাই তারা ভালোমন্দের ব্যবধান ভুলে গেছে। জ্ঞান ও মনুষ্যত্বের আলোকরশ্মি তাদের অন্তরে প্রতিফলন হয় না। অথচ মূর্খ, অসৎ লোকেরাই পৃথিবীর পরিচালক। কিন্তু ইতিহাস বলছে প্রতিটা ধর্মের প্রবর্তক বা পরিচালক এমন ছিল না। আজকের এই পরিচালক গুলো প্রকৃত সত্য ও সুন্দরকে জানে না, অন্তরে কোনো গভীরতা নেই, প্রতিনিয়ত মানবতাকে পদদলিত করতে কুন্ঠিত হয় না।

তারা যেন সেই অন্ধকার যুগে ফিরে যাওয়া এক একটি বর্রবর যুগের মানুষ। জ্ঞানী ও বিচক্ষণ মানুষের কাছ থেকে কুটকৌশলে ক্ষমতা হরণ করে আধিপত্যবাদিরা নির্বিচারে অন্যায় অবিচার চালাচ্ছে, মানবাধিকারের নামে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। সত্যের অন্তরালে অন্যায়ের লেলিহান শিখা জ্বালিয়ে দিয়েছে নিজ দেশসহ পৃৃৃথিবীর বুকে। এরাই বুুুুদ্ধিমান, বুদ্ধিজীবী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেয় মূর্খের মতো। সত্য, সুন্দর ও মঙ্গল বিষয়কে অন্ধকারের আড়ালে লুুকিয়ে রেখে মিথ্যাকেই প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছে। এমনতর মূর্খ এবং অসৎ লোকের পরামর্শ কিংবা নেতৃত্বে আজ পৃথিবী বিপন্ন। এরা পেশিশক্তির মাধ্যমেই নিজেদের জ্ঞানের প্রকাশ ঘটাতে চাচ্ছে। জাগতিক সকল সমস্যার সমাধান নিজের মতামতকেই যেন প্রাধান্য দিয়ে অন্ধকারময় একপরিবেশ সৃষ্টি করছে। এমন ধরার মধ্যে পড়ে না সেই মানুষের হৃদয় নিষ্কলুষ, দৃষ্টি তাদের প্রসারিত, তাদের সত্য ও ন্যায় লাঞ্ছিত ও অপমানিত। ফলে জ্ঞানীই নয়, শক্তিমানরাই আজকের সময়ে কোনো এক লোভ লালসায় অমানুষ হয়েই যেন নিজ থেকেদার্শনিকের ভুমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছে।

লেখক: নজরুল ইসলাম তোফা
'টিভি ও মঞ্চ অভিনেতা, চিত্রশিল্পী, সাংবাদিক, কলামিষ্ট এবং প্রভাষক'।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

৫২’র ভাষা শহীদদের জীবনী : রফিক, সালাম, জব্বার, বরকত, শফিউর | আমাদের শিল্পসাহিত্য

শহীদ রফিক উদ্দিন আহমদ শহীদ রফিক উদ্দিন আহমদ এর জন্ম ১৯২৬ সালের ৩০ অক্টোবর। গ্রামের নাম-পারিল (বতর্মানে যার নামকরন করা হয়েছে রফিকনগর), থানা- সিংগাইর, জেলা- মানিকগঞ্জ। তার পিতার নাম- আব্দুল লতিফ, মাতার নাম- রাফিজা খাতুন। ৫ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে রফিক উদ্দিন আহমদ ছিলেন ভাইদের মধ্যে সবার বড়। তিনি মানিকগঞ্জ বায়রা কলেজ থেকে ১৯৪৯ সালে ম্যাট্রিক পাশ করেন। মানিকগঞ্জ দেবেন্দ্রনাথ কলেজে আই কম পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। কলেজের পাঠ ত্যাগ করে ঢাকায় এসে পিতার সঙ্গে প্রেস পরিচালনায় যোগ দেন। ২১শে ফেব্রুয়ারীতে শাসকগোষ্ঠীর জারীকৃত ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে যে বিক্ষোভ মিছিল হয় সেখানে তিনি অংশগ্রহন করেন।পুলিশের বেদম লাঠিচার্জ ও কাদানে গ্যাসের কারনে অন্যান্যদের সাথে তিনিও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ছেড়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেলে আশ্রয়গ্রহন করতে যান। এ সময়ে পুলিশের একটু গুলী সরাসরি তার মাথায় আঘাত হানে ও তিনি সাথে সাথেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। সম্ভবত ২১শে ফেব্রুয়ারীর প্রথম শহীদ হওয়ার মর্যাদা রফিক উদ্দিন আহমদই লাভ করেন। তাকে আজিমপুর গোরস্থানে দাফন করা হয়। তবে দুঃখজনকভাবে পরবর্তীতে তার কবর চিহ্নিত করা সম্ভব হয় নি। শহীদ আব্দ...

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন নিয়োগ পরীক্ষার পদ্ধতি, যোগ্যতা এবং প্রস্তুতি জেনে নিন এক নজরে

✍️অনেকটা বিসিএসের আদলে নেয়া হয় এই নিয়োগ পরীক্ষাটি। 📌সারাদেশে নিম্ন-মাধ্যমিক, মাধ্যমিক, কলেজ, মাদ্রাসা এবং কারিগরিসহ  প্রায় ৩৬ হাজার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ আবশ্যক।  📌আর সেই লক্ষ্যে ২০০৫ সাল থেকে সরকার কর্তৃক এনটিআরসিএ (NTRCA) বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগের জন্য বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন নিয়োগ পরীক্ষা চালু করেছে। 📌দেশের কোন বেসরকারি বিদ্যালয় বা কলেজে এই নিবন্ধন ছাড়া চাকরীর কোন সুযোগ নেই। তাই শিক্ষকতায় ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা বাধ্যতামূলক দিতেই হবে। ✍️শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার যোগ্যতাঃ ________________________ 📌শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় কলেজ ও স্কুল পর্যায়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে আপনাকে কমপক্ষে স্নাতক পাস হতে হবে। আর স্কুল পর্যায় -২ এর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে আপনাকে কমপক্ষে এইচএসসি পাস হতে হবে। 📌তবে যারা সদ্য পাস করেছে সেসব প্রার্থীরা সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দেওয়া প্রশংসাপত্র, মার্কশিট, প্রবেশপত্রসহ আবেদন করতে পারবেন। 📌নিবন্ধন পরীক্ষায় আবেদনে...

কবিতার পাণ্ডুলিপি তৈরি করার সেরা কৌশল : জেনে নিন এক নজরে

কবিতা লেখা অনেকেরই শখ। তবে সেই কবিতাগুলো যদি বই হিসেবে প্রকাশ করতে চান, তাহলে প্রয়োজন পাণ্ডুলিপি। অনেকেই কবিতা লিখে রাখেন খাতায়, মোবাইলের নোটে বা ফেসবুকে পোস্ট আকারে। কিন্তু সেগুলো পাণ্ডুলিপিতে রূপ না দেওয়ায় কখনো বই হয়ে ওঠে না। আজ আমরা জানব—   👉 কবিতার পাণ্ডুলিপি কী? 👉 কীভাবে কবিতার পাণ্ডুলিপি তৈরি করবেন?  👉 কবিতার পাণ্ডুলিপির আদর্শ কাঠামো কোনটি? 👉 কবিতার পাণ্ডুলিপি আকর্ষণীয় করার জন্য কার্যকর কিছু কৌশল! ক) কবিতার পাণ্ডুলিপি কী? কবিতার পাণ্ডুলিপি হলো বইয়ের জন্য প্রস্তুত একটি গোছানো খসড়া। এখানে কবিতাগুলো একটি পরিকল্পিত কাঠামো অনুযায়ী সাজানো থাকে, যেন প্রকাশক তা সহজেই বই হিসেবে প্রকাশ করতে পারেন। কবিতার পাণ্ডুলিপিতে থাকে: ভূমিকা বা কবির কথা, উৎসর্গ বা কৃতজ্ঞতা, কবিতাগুলোর ধারাবাহিক ও বিষয়ভিত্তিক বিন্যাস, প্রতিটি কবিতার নির্ভুল নাম ও বানান, শেষে কবির সংক্ষিপ্ত জীবনী। খ) কীভাবে কবিতার পাণ্ডুলিপি তৈরি করবেন? নিচে ধাপে ধাপে পাণ্ডুলিপি তৈরির প্রক্রিয়া দেওয়া হলো: 👉 ধাপ ১: কবিতাগুলো সংগ্রহ ও নির্বাচন: আপনার লেখা সব কবিতা একত্রিত করুন। টাইপ করে একটি ডকুমেন্টে নিয়ে আসুন। মানসম্প...

রহস্য উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি তৈরি করার সেরা কৌশল - জেনে নিন এক নজরে

রহস্য উপন্যাস মানেই পাঠককে একটা অজানা কিছুর পেছনে টেনে নেওয়া। এখানে প্রতিটি চরিত্র সন্দেহভাজন, প্রতিটি ক্লু বিভ্রান্তিকর, আর সমাপ্তি এমন, যা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। আর সেই কাজটি শুরু হয় একটি শক্তিশালী পাণ্ডুলিপি দিয়ে। আজ আমরা জানব— 👉 রহস্য উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি কী 👉 কীভাবে একটি মানসম্পন্ন রহস্য উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি তৈরি করবেন?  👉 আদর্শ রহস্য উপন্যাসের পাণ্ডুলিপির কাঠামো কেমন হওয়া উচিত?  👉 রহস্য উপন্যাসের পাণ্ডুলিপিকে আরও আকর্ষণীয় করার কৌশল! ক) রহস্য উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি কী? রহস্য উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি হলো একটি পূর্ণাঙ্গ, গুছানো ও প্রকাশযোগ্য খসড়া। এখানে একটি রহস্য ধাপে ধাপে উন্মোচিত হয়। এতে কাহিনির সূচনা, ক্লু, সন্দেহভাজন চরিত্র, বিভ্রান্তি, তদন্ত এবং সমাধান—সবকিছু সুনির্দিষ্টভাবে গাঁথা থাকে। পাঠক যেন প্রতিটি পৃষ্ঠা পড়ে একধরনের মানসিক উত্তেজনায় থাকে। খ) কীভাবে একটি মানসম্পন্ন রহস্য উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি তৈরি করবেন? ✅  শুরুতেই রহস্য তৈরি করুন: গল্প শুরুতেই এমন একটি ঘটনার ইঙ্গিত দিন যা পাঠকের কৌতূহল জাগায়। যেমন: সকালবেলা চায়ের কাপের পাশে একটা চিঠি পড়ে ছিল। তাতে লেখা: ‘আমি...

শব্দকথা সাহিত্য পুরস্কার-২০২৫ এর জন্য বই আহ্বান

৩য় বারের মতো শব্দকথা প্রকাশন-এর উদ্যােগে আটটি বিভাগে "শব্দকথা সাহিত্য পুরস্কার-২০২৫" প্রদানের জন্য বই আহ্বান করা হয়েছে।  ✅ বিভাগগুলো হলো: ১। কবিতা ২। উপন্যাস ৩। প্রবন্ধ ও গবেষণা ৪। শিশু-কিশোর সাহিত্য  ৫। সায়েন্স ফিকশন  ৬। ছোটোগল্প  ৭। অনুবাদ সাহিত্য  ৮। আত্মজীবনী, স্মৃতিকথা ও ভ্রমণকাহিনী  ✔️দিনব্যাপী একটি জাকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আটটি বিভাগে নির্বাচিত লেখকগণকে সম্মাননা, ক্রেস্ট, উত্তরীয় এবং সম্মাননাপত্র প্রদান করা হবে। ✔️২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে রচিত মৌলিক গ্রন্থসমূহ প্রতিযোগিতার জন্য বিবেচিত হবে। ✔️প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণেচ্ছুদের বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। ✔বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশিরা এতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। ✔️বই জমা দেওয়ার পর যে কোনো পর্যায়ে অথবা পুরস্কার প্রদানের পর যদি অবগত হওয়া যায় যে, কোনো বই অন্য কোনো বইয়ের অনুকরণ অথবা আংশিক প্রতিরূপে রচিত, সেক্ষেত্রে বইটি বাছাই প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়ার এবং পুরস্কার প্রত্যাহারের অধিকার বিচারকমণ্ডলীর সংরক্ষিত থাকবে। ✔️পুরস্কারের যে কোনো পর্যায়ে বাছাইয়ের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির রচ...

প্রজন্মের জন্য 'চিরকুট' - শাহীদুল আলম | আমাদের শিল্পসাহিত্য

প্রিয়,  দুনিয়ার সকল বাংলা ভাষাভাষী। যাঁরা এই চিরকুট পড়া শুরু করতে যাচ্ছো, যাদের এই লেখা পড়তে কোনো কষ্ট হয়না এমনকি আগামী প্রজন্মের জ্ঞানপিপাসু, অনুসন্ধানী নব তরুণ, যারা মেধা বিকশিত হওয়ার পথে ও ভালোমন্দ বিচার করার সক্ষমতা অর্জন করেছো। যারা সত্যকে জানার জন্য উদগ্রীব থাকে প্রতিনিয়ত, তাদের জানাই সশ্রদ্ধ সালামসহ একরাশ অগ্রিম শুভেচ্ছা ও চিরকুট পড়ার ভুবনে সু-স্বাগতম।  তোমাদের জন্য আমার কিছু কথা ভবিষ্যতের জন্য বলে যেতে চাই, কিছু কথা রেখে যেতে চাই, যে কথাগুলো হবে  তোমাদের জন্য গ্রহণযোগ্য, জীবন চলার পথে শক্তি ও মুক্তি আবার হয়তো  মহাচিন্তার কারণ। তবে জেনে রেখো এটাই সত্য ও বাস্তবতার নিরিখে লেখা অপ্রিয় সত্য বাণীই হবে তোমাদের আগামীর পথচলার, ভবিষ্যৎ গড়ার পথনির্দেশক। যদি এই চিরকুটের কোনো চরণ তোমাদের জীবন চলার পথে এগিয়ে যাওয়ার কারণ কিংবা কাজে এসেছে মনেহয় তাহলেই হবে আমার লিখে যাওয়া চিরকুটের সার্থকতা।  শুরুতে বলতে চাই "চিরকুটটা" সম্পূর্ণ পড়ার মনমানসিকতা ও ধৈর্য ধরে পড়ার চেষ্টা করতে হবে। প্রতিটি লাইন পড়তে হবে দ্রুত পড়তে যেয়ে হয়তো কোনো লাইন বাদ দিয়ে চলে যাবে ফলে মূল বিষয়বস্তু বুঝতে ব...

পাণ্ডুলিপি কী এবং কীভাবে প্রথম বইয়ের পাণ্ডুলিপি তৈরি করবেন?

প্রথম বই প্রকাশ করার স্বপ্ন সব লেখকের মনেই থাকে। কিন্তু সেই স্বপ্নের প্রথম ধাপ হচ্ছে একটি পরিপূর্ণ পাণ্ডুলিপি তৈরি করা। ব্যাপারটি অনেকের কাছে কঠিন ও জটিল মনে হয়। এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি সহজভাবে বুঝতে পারবেন পাণ্ডুলিপি কী, কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ এবং কীভাবে গুছিয়ে তৈরি করবেন আপনার প্রথম বইয়ের পাণ্ডুলিপি।   👉 পাণ্ডুলিপি কী? বই প্রকাশ করার আগে যেটি তৈরি করা হয়, সেটিই পাণ্ডুলিপি। এটি আপনার বইয়ের একটি পূর্ণাঙ্গ খসড়া। এটি হতে পারে হাতে লেখা অথবা টাইপ করা। তবে ডিজিটাল এই যুগে টাইপ করা পাণ্ডুলিপি বেশি গ্রহণযোগ্য। পাণ্ডুলিপিতে বইয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত লেখা থাকে, অধ্যায়/পর্ব/অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সাজানো থাকে, লেখকের ধারণা অনুযায়ী নাম, ভূমিকা, উৎসর্গ, সূচিপত্র ইত্যাদি থাকে। পাণ্ডুলিপিই প্রকাশকের হাতে যায় বই প্রকাশের জন্য। এটি প্রকাশযোগ্য কিনা, তা বিচার হয় এই পাণ্ডুলিপির ভিত্তিতেই।  👉 কীভাবে পাণ্ডুলিপি তৈরি করবেন? প্রথমবারের মতো পাণ্ডুলিপি বানাতে গিয়ে ভয় পাওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু কাজটি একদমই কঠিন নয়, যদি আপনি নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করেন: ১. লক্ষ্য নির্ধারণ করুন (আপনি কী লিখতে চান): প্র...

বিশেষ কাহিনী চিত্র ❝প্রেম বলে কিছু নেই❞ দেখতে চোখ রাখুন এসএটিভি'র পর্দায়

কাজী সাইফ আহমেদের নির্মাণে ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিশেষ কাহিনী চিত্র ❝প্রেম বলে কিছু নেই❞ দেখবেন ঈদের ৬ষ্ঠ দিন রাত ৮:টায়। রচনা: পাভেল ইসলাম   অভিনয়ে:  গোলাম কিবরিয়া তানভীর, মাফতোহা জান্নাত জীম, পাভেল ইসলাম, সঞ্জয় রাজ প্রমুখ। চিত্রগ্রহণ ও সম্পাদনায় : সোহাগ খান এসকে                 ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক: জাহিদ হাসান আনন               নির্বাহী প্রযোজক : ফাল্গুনী মুখার্জী  প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান :  অরোরা অ্যাড মিডিয়া                      একটি শঙ্খচিল এন্টারটেইনমেন্ট নির্মাণ   ।           

আর্টলিট পাণ্ডুলিপি পুরস্কার ২০২৪-এর জন্য পাণ্ডুলিপি আহ্বান

আর্টলিট পাবলিকেশন আয়োজন করছে 'আর্টলিট পাণ্ডুলিপি পুরস্কার ২০২৪'। সারাদেশের যেকোনো লেখক যেকোনো বিষয়ের পাণ্ডুলিপি জমা দিতে পারবেন। পুরস্কার হিসেবে বিজয়ী পাণ্ডুলিপির সেরা ১০ লেখক পাবেন অগ্রিম রয়্যালিটি, বইয়ের সৌজন্য কপি-সহ নানান সুবিধা। এছাড়া নির্বাচিত ৩০ পাণ্ডুলিপির লেখকরা পাচ্ছেন বই প্রকাশে বিশেষ সুযোগ! 👉 প্রতিযোগিতার নিয়মাবলি:> > ১. পাণ্ডুলিপিটি হতে হবে মৌলিক ও অপ্রকাশিত। ২. লেখক চাইলে যেকোনো ক্যাটাগরির যেকোনো বিভাগে যেকোনো সংখ্যক পাণ্ডুলিপি পাঠাতে পারবেন। ৩. সকল বিভাগের পাণ্ডুলিপির শব্দসংখ্যা উন্মুক্ত।  ৪. গুছিয়ে পাণ্ডুলিপিটি পাঠাতে হবে। যেমন: বইয়ের নাম, লেখক নাম, ফ্ল্যাপ, উৎসর্গ, সূচিপত্র, পৃষ্ঠাসংখ্যা, লেখার শিরোনাম, কনটেন্ট ইত্যাদি প্রয়োজনীয় সকল বিষয় থাকতে হবে। ৫. পাণ্ডুলিপির সাথে লেখকের ছবি, সংক্ষিপ্ত পরিচয়, প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা, মোবাইল নাম্বার, ইমেইল অ্যাড্রেস পাঠাতে হবে। ৬. পাণ্ডুলিপি পাঠানোর সময় ইমেইলের সাব্জেক্টের ঘরে ক্যাটাগরি ও বিভাগের নাম উল্লেখ করতে হবে। ৭. পাণ্ডুলিপি SutonnyMJ অথবা ইউনিকোড ফন্টে কম্পোজ করে পাঠাতে হবে। ৮. পাণ্ডুলিপি পাঠানোর ইমেইল ঠিকানা: ar...

আসছে বিজয় দিবসে দেশাত্মবোধক নাটক ‘পতাকা'

নতুন প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত এবং নাগরিক ইট-পাথরের ব্যস্ত শহরে মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ মাতৃকার প্রতি ভালোবাসার আকুতি কতটুকু এমন প্রশ্নকে উপজীব্য করে নির্মিত হয়েছে নাটক 'পতাকা’। রুদ্র মাহফুজের রচনা ও কাজী সাইফ আহমেদের পরিচালনায় বিজয় দিবসের বিশেষ এই নাটকটির প্রধান দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন তরুণ প্রতিভবান অভিনেতা তৌসিফ মাহবুব ও মডেল অভিনেত্রী সাফা কবির। সম্প্রতি উত্তরা, ৩০০ ফিট, শাহবাগ সহ ঢাকার বেশ কয়েকটি লোকেশনে নাটকটির দৃশ্যায়ন সম্পন্ন হয়েছে। নাটক প্রসঙ্গে তৌসিফ বলেন,‘শরাফত নামের যে চরিত্রটি আমি করেছি সে নদীভাঙা এক হতভাগ্য। কাজের সন্ধানে সে ঢাকায় এসে মৌসুমী পণ্যের হকারে পরিণত হয়। এক পর্যায়ে সে পতাকা বিক্রি শুরু করে এবং ঘটনা ক্রমে লক্ষ্য করে বিপন্ন-পরাস্ত দেশপ্রেমকে। একই প্রসঙ্গে সাফা কবির বলেন,‘প্রথমেই বলবো, এটি গতানুগতিক কোনো গল্পের নাটক নয়। গতানুগতিক ধারা থেকে বের হয়েছি এবং নিজেকে ভাঙতে পারলাম এই প্রথম। নাটকটি শৈল্পিক অভিমুখতায় নতুন পথ খুঁজে পেয়েছে। বিশেষ করে পরিচালক সাইফ ভাইয়ের ইউনিট ছিল অসাধারন। সবাই ছিল খুব বেশি কো-অপারেটিভ। তরুণ নির্দেশক কাজী স...