সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পরিকল্পিত উন্নয়নের ছোঁয়ায় দেশীয় চিঠির যোগাযোগ অদৃশ্যের পথে | আমাদের শিল্পসাহিত্য

নজরুল ইসলাম তোফা: ✉ পরিকল্পিত উন্নয়নের ছোঁয়াতে বদলে গেছে বা যাচ্ছে বাংলাদেশ। বদলে যাচ্ছে- দেশের জনপ্রিয় ইতিহাস, ঐতিহ্যের তথ্য আদান-প্রদানের বৃহৎ  মাধ্যম ডাকঘর। তমধে বদলেও গেছে ছোট্ট একটি শব্দ চিঠি,📧📩 তার মাধ্যমে আদানপ্রদানের প্রচলন। এমন চিঠির প্রচলন ও ইতিহাসটা ছিল অনেক পুরোনো। চিঠি অথবা পত্রের মাধ্যমে একজনের পক্ষ থেকে অন্যজনের কাছে লিখিত তথ্যধারক বার্তা বললেও ভুল হবে না। চিঠিতেই দুজন বা দুপক্ষের মধ্যেই যেন যোগাযোগ বজায় রাখে। বলাই চলে যে, বন্ধু এবং আত্মীয় স্বজনদের খুবই ঘনিষ্ট করে, পেশাদারি সম্পর্ককে খুব উন্নয়ন করে এবং আত্ম প্রকাশের সুযোগ প্রাণবন্ত করে তোলে। কিন্তু 'ডিজিটাল সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে' এসেই চিঠি লেখার পাট শেষের পথে। নিজ হস্তে চিঠি লেখার প্রচলন এখন নেই বললেই চলে। কালি কলম বা বল পেনের মাধ্যমেই চেয়ারে বসে ঠিক টেবিলের উপর সাদাকাগজ কিংবা রঙিন কাগজে চিঠি আর লেখেনা। বলতেই হয় যে আধুনিক যুগে উন্নত প্রযুক্তির ছোঁয়ায় কালের গর্ভেই যেন এমন এই মাধ্যমের ব্যবহার বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে। স্ব-হস্তে লেখা চিঠির মধ্যেই হৃদয়ের শত সহস্র কথা ও তার আবেগ, আকুলতা এবং ব্যাকুলতা সব বিষয় প্রকাশ পেত। মা-বাবা তাঁর সন্তনের হাতের লেখা চিঠিটা যখন কাছে পেত, ঠিক তখনই যেন লেখাটিতে কোমল হৃদয় দিয়ে পড়ে। চিঠির মধ্যেই বাবা মা নিজের সন্তানের মুখটাও দেখতে পেতো। অবচেতনে চিঠি বুকে জড়িয়েও আদর করে। প্রাচীন কাল থেকেই মানুষ চিঠি আদানপ্রদান করেছে, ইলিয়াডে তার উল্লেখ ছিল। হিরোডোটাস ও থুসিডাইডিসের রচনাবলীতে তা উল্লেখ করাও আছে।
📨📝
অশিক্ষিত মানুষরা শুধুমাত্র চিঠি পড়া ও লেখার জন্যেই যেন স্বাক্ষরতা অর্জনের খুব চেষ্টা করেছিল। সেই সময়ে স্বাক্ষরতা টিকিয়ে রাখার বিশাল অবদান 'চিঠি'। আবার পারিবারিক চিঠি গুলো অনেক সময় খবরের কাগজের বিকল্প হিসাবেই যেন ব্যবহার করেছিল। কোনো চিঠিতে গ্রামের যেকোন ঘটনা ও আশা ভরসার খবর, আবাদের খবর বা প্রকৃতিক দুর্যোগের খবরসহ বিভিন্ন খবর লেখা থাকত। আসলে, হাতে লেখা চিঠি পরিবারের মধ্যে যেন নিবিড় সম্পর্ক ও ভালবাসার গভীরতার সেতু বন্ধন সৃষ্টি হতো। প্রেম ভালোবাসার চিঠি গুলো তো ছিল একেকটি কালজয়ী বৃহৎ প্রেমের ইতিহাস। প্রচলিত চিঠির যুগেরই সকল প্রেমিক-প্রেমিকা'রা হৃদয়ের আকুলতা-ব্যাকুলতা কিংবা প্রতীক্ষার প্রহরের খুঁটি নাটি অনেক কিছুই সহজ সরল ভাষায় মনের মাধুরীতে লিখত। যা পড়ে পুলকিত হওয়ার পাশাপাশি তা সংগ্রহ করে রাখতো। চিঠিগুলোর ভাষা ও  ভাবকে মনেই হতো শত ফুল দিয়ে গাঁথা একটি গল্প বা উপন্যাস। বিশ্বের সবচেয়ে বড় চিঠিটা লিখেছিল নিউইয়র্কের ব্রুকলিনের একজন নারী তার প্রেমিককে। ১৯৫২ সালে কোরিয়াতেই যুদ্ধ চলাকালীন সময় লেখে। তখন তার প্রেমিক মার্কিন সেনাবাহিনীর একজন যুদ্ধের সৈনিক ছিল। সেই চিঠিটার দৈর্ঘ্য ছিল ৩ হাজার ২০ ফুট লম্বা যা লিখতে সময় লেগেছিল একমাস। আবার খুবই  ক্ষুদ্র চিঠি লিখেছিল চমৎকার ভাষাতে ফ্রান্সের বিখ্যাত সাহিত্যিক ও ঔপন্যাসিক ভিক্টর হুগো। তা ছাড়াও আর এক ঘটনা স্মরণ করার মতোই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের শৈশবের লেখা একটি চিঠি বা পত্র সম্পর্কে বলতেই হয়, তিনি বাড়ি থেকে বহুদূরে পড়তে গিয়েই সবেমাত্র বাংলা স্বরবর্ণের পরিচয় হয়েছিল। তখন তাঁর টাকার প্রয়োজন হয়েছিল। তিনি কী আর করবে, শুধু মাত্র স্বরবর্ণ দিয়েই বাবার কাছে চিঠি বা পত্র লিখেছিল। বর্ণের সাথে ‘কার’ যোগ করলে তা ঠিক এমনটি হয় 'বাবা টাকা পাঠাও তো পাঠাও, না পাঠাও তো- ভাত অভাবে মরি'। তাঁর চিঠিতে এই ভাবে লিখে ছিল- ‘বব টক পঠও ত পঠও ন পঠও ত ভত অভব মর’। চিঠি নিয়ে সে সময়ের বহু স্মৃতির মতো এখনকার আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি যুগে তেমন স্মৃতি স্মরণ রাখার মতো নেই বললেই চলে। চিঠিপত্র লেখাকে কেন্দ্র করেই বেড়ে গিয়েছিল চিঠি লেখাকে পেশা রূপে নেয়ার প্রবণতা। ডাকঘরের বারান্দায় লাইনের পর লাইন ধরেই সকল শ্রেণীর মানুষের ভিড় লেগেই থাকত। ডাকটিকিট, পোস্টাল অর্ডার, ইনভেলাপ, রেজিস্ট্রিচিঠি, মনিঅর্ডার, পোস্ট কার্ড, বীমা, পার্সেল, জিএমই, ভিপিপি, ইএমএস, স্মারক ডাকটিকিট, ডাক জীবনবীমা, লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক সহ সরকারি কর্মচারীদের বেতন। এমনকি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পও ডাকঘর থেকেই যেন সংগ্রহ করতো। এ গুলো চাহিদাতেই চিঠিপত্রের আদান প্রদানের মাধ্যম খুব দ্রুতগতিতে জনপ্রিয় হয়ে উঠ ছিল। তখনকার যুগে যে সব মানুষরা লেখাপড়া জানতোই না, ডাকঘরের লেখকেরা সেই ডাকঘরের বারান্দাতে কিংবা সুবিধাজনক স্থানেই চেয়ার-টেবিল বসিয়ে লেখাপড়া না জানা মানুষের পে চিঠিপত্র, মনিঅর্ডার কিংবা মালামাল প্রেরণসংক্রান্ত কাজ করে দিতো। ব্রিটিশ আমল থেকেই শুরু করে দেড় শ’ বছর পর্যন্তই ছিল চিঠিপত্রের রমরমা অবস্থা। গাঁওগেরামের বেশকিছু স্বল্পশিতি লোকজনরাই বিনে পয়সায় চিঠি লিখে দেওয়ার কাজ করতো। অবশ্য তাদের কদরই ছিল আলাদা। তাদের এমন এই মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা সত্যিই প্রশংসনীয়। তারা যেন নাওয়া-খাওয়ার এতটুকু সময় পেতো না। আর এ যুগের মানুষ হয়েছে স্বার্থপর ও আত্মকেন্দ্রিক। তখনকার দিনে পত্র মিতালীর প্রচলনও ছিল খুব বেশ। প্রতি বছর প্রচুর ছেলে-মেয়ের নাম ঠিকানা সম্বলিত পত্রমিতালী গাইডও পাওয়া যেত বিভিন্ন বুক স্টলে বা পত্রিকার স্টলে। এসব পত্রমিতালীর গাইড থেকেই অনেকে পছন্দের বন্ধু খুঁজে নিত আর শেয়ার করতো জীবনের সুখ-দুঃখের বহুগল্প। একজন অন্য জনকে চিঠি লিখতো অনেক সুন্দর করে। যাতে স্থান পেত বিভিন্ন কবিতার লাইন বা গানের কথা। ব্যবহার হতো বিভিন্ন বর্ণিল চিঠির প্যাডও। হলুদ খামের এক একটি চিঠি যেন একটি গীতি কবিতা।
💬📋
আবার অনেক দিনের চিঠিগুলি তারা যেন ফেলে দিতো না। প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই সাইকেলের স্পোকের মাথায় বড়শির মতো করে তার মধ্যেই যেন গেঁথে রাখতো। সেই চিঠিগুলো তাদের নীরব স্বাক্ষী। বাজারে রাইটিং প্যাডও (চিঠি লেখার প্যাড) পাওয়া যেতো। রঙ-বেরঙের হরেক রকমের প্যাডে প্রিয়জনের নিকটে সুস্পষ্ট হরফে বিভিন্ন কালি বা কলমের মাধ্যমে চিঠি লিখতো। আবার চিঠিটা লিখে, আঠা দিয়ে খামের মুখটা বন্ধ করে তাতে স্ট্যাম্প সেঁটে, বহুদূর হেঁটে গিয়ে যেন ডাকবাক্সে চিঠি ফেলতো।প্রেম ও ভালোবাসার ক্ষেত্রে তাদের যদি- প্রেমের ব্যর্থতা আসতো, সেক্ষেত্রে চিঠি দিয়ে অনুভূতি গুলোকে প্রকাশ করতো। আবার পরিবারের চিঠিই হোক বা প্রেমের চিঠি হোক না কেন, তা অবশ্যই নান্দনিকতার সৃষ্টিতেই লেখা হয়। কোন কোন চিঠিটা পড়ে হৃদয় জুড়িয়ে যেত। কোন চিঠি পড়ে আনন্দে পুলকিত হতো। আবার কোন চিঠিটা পড়ে চোখের জলও পড়ে। মনের আবেগ-অনুভূতি এবং চাওয়া-পাওয়া, স্বপ্ন-সাধের কথাগুলো লেখাও থাকতো সকল মানুষের চিঠিতে। ডাক পিয়নের প্রতীক্ষায় দিনের পর দিন মানুষেরা থাকতো কখন পিয়ন এসেই কাঙ্খিত চিঠিটি তার হাতে দেবে। চিঠি পেলেই মনের মধ্যে সে কী অনুরণন! যতক্ষণ চিঠি না পড়বে ততক্ষণ মনের শান্তনা খুঁজে পায়না।
🗒
বাংলাদেশের মানুষ বিদেশে চিঠি পৌঁছানোর জন্যে যেন বিশেষ ধরনের নীল রঙের এয়ার মেইল পার অ্যাভয়েন ছাপাঙ্কিত খাম ব্যবহার করতো। বলাই যায় নীল কাগজ এবং খামে লেখা চিঠিগুলো ছিল প্রেমের চিঠির প্রতীক। পোস্ট অফিসের এ সব চিঠিকে ঘিরেই এসেছে সভ্যতা।প্রথম স্ট্যাম্প করা চিঠি রানী ভিক্টোরিয়ার রাজত্ব কালে ১৮৪০ সালের দিকেই শুরু হয়। প্রাচীন কাল থেকে ভাব বিনিময়ের প্রধান মাধ্যম ছিল চিঠি। মানুষের মনের ভাব আদান প্রদানে চিঠি দীর্ঘকাল ধরেই রাজত্ব করেছে। এই মাধ্যম যতদিক দিয়ে সফল হয়েছিল, তা ভবিষ্যতে অন্য কোনো মাধ্যমের দ্বারা সফলতা পাবে কিনা সন্দেহ। তাই চিঠির যুগের কথা মনে হলে এখনো যেন মানুষের কানে কানেই ভাসে বাংলা ছায়াছবির জনপ্রিয় গান 'চিঠি দিও প্রতিদিন, চিঠি দিও/ নইলে থাকতে পারবো না'। প্রেমের এই চিঠি আদান-প্রদানও ছিল এ্যাডভেঞ্চারাস। লুকিয়ে চিঠি লিখে খামে ভরেই 'পোস্ট অফিসের বাক্সে' ফেলার পর শুরু হতো ফিরতি চিঠির পাওয়ার প্রহর গোনা। এই ক্ষেত্রে পিয়নরাও ছিল প্রণয় গভীর করে দেওয়ার জন্যে অনুঘটক। গত ৮০ কিংবা ৯০-এর দশকে চিঠিতেই যেন যোগাযোগ মাধ্যম ছিল অন্যতম। চিঠি আসবে প্রেমিক- প্রেমিকার; সেই অপেক্ষাতেই প্রেমিক বা প্রেমিকার বসে থাকা পথের দিকে চেয়ে। চিঠি পাঠাবে ছেলে; মাও যেন অপেক্ষাতে থাকে। স্বামীর চিঠির অপেক্ষাতেই মুখ ভার করে পুকুর পাড়ে স্ত্রীর বসে থাকে, যার কোনো অস্তিত্বই আজ খোঁজে পাওয়া যায় না।

চিঠির যুগে মানুষের ভাষাজ্ঞানের সীমাবদ্ধতা থাকলেও আন্তরিকতার বিন্দুমাত্র কমতিও ছিল না চিঠির পাতায়। বানান ও ভাষাগত ভুলভ্রান্তি যেন চাপা পড়েছিল তাদের আন্তরিক ভালোবাসার আড়ালে। বিখ্যাত কবি, মহাদেব সাহাও লিখেছিল-'ভুল বানানেও লিখো প্রিয়, বেশি হলে কেটে ফেলো তাও.../এটুকু সামান্য দাবি,...চিঠি দিও,... তোমার শাড়ির মতো.../ অক্ষরের পাড়-বোনা একখানি চিঠি'। আগেকার রাজা বাদশারা- প্রেমিকার কাছে চিঠি লেখতো। তারা এক রাষ্ট্রের সাথে অন্য যেকোনো রাষ্ট্রের সম্পর্ক স্থাপন করতে এবং দেশের কূটনৈতিকদের মধ্যে প্রধান সমন্বয় করতে চিঠির মাধ্যমে আদানপ্রদান হতো। তারা স্ব-দেশের খবর দূর-দূরান্তে পৌঁছাতে যেন ঘোড়ায় সওয়ার হয়ে বা কবুতর কিংবা পাখির পায়ে চিঠি লিখে উড়িয়ে দেয়া হতো। প্রতুত্তরে অন্যান্য দেশের রাজাগণও কবুতরের পায়ে চিঠি লিখে খবর পৌঁছিয়ে দিতো। জানা যায়, সম্রাট শের শাহের সময়েই ঘোড়ায় চড়ে ডাক বিলি প্রথা চালু হয়। কালক্রমেই জমিদারদের এমন প্রথা চালু ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় চিঠি আদান প্রদানের প্রচলন দেখা দিয়ে ছিল। রানাররা পিঠে চিঠি বা সংবাদের বস্তা সহ ১ হাতে হারিকেন অন্য হাতে বর্শা নিয়ে রাতের অন্ধকারে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে ছুটে যেতো।
📄📃📖✉
বাংলা সাহিত্যেও ’চিঠি’ বেশ জায়গা দখল করে আছে। অবশ্য এক্ষেত্রে বলা যায় যে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলো অগ্রগামী। কবিগুরু জীবনে যা চিঠি লিখেছিল তা অন্য কোন কবি ও সাহিত্যিক লিখে ছিল কি না সন্দেহ। আর জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের পত্র নির্ভর আত্মজৈবনিক উপন্যাস লিখেছিল-বাঁধনহারা। সেখানে তিনি প্রথম স্ত্রী নার্গিসকে যে চিঠি লিখেছিল তা আজও অনন্য। চিঠির এক জায়গায় কবি লিখেছিল-'তুমি ভুলে যেও না আমি কবি,... আমি আঘাত করলেও ফুল দিয়ে আঘাত করি।... অসুন্দর কুৎসিতের সাধনা আমার নয়। আরও লিখা আছে, 'আমার আঘাত বর্বরের কাপুরুষের আঘাতের মতো নিষ্ঠুর নয়'। সুতরাং- চিঠি যে শুধু মনের ভাব আদানপ্রদান হতো তা নয় বরং কবি সাহিত্যিকদের চিঠির মধ্যেই ফুটে উঠতো সাহিত্য-সংস্কৃতির নানা দিক। কবি কালিদাস কর্তৃক প্রেমিকার নিকট প্রেরিত বার্তাতে দূত ছিল মেঘ। নল-দময়ন্তীর পত্রের বাহক হাঁস, আবার রামায়ণের পত্র বাহক- হনুমান, মহাভারতে বাহক- বিদুর ও আনারকলিতে হরিণ দূতিয়ালির কাজে ব্যবহার হতো চিঠি।

চিঠি বা মানি অর্ডার কমে যাওয়াতেই যেন সমগ্র দেশের ডাকঘর ও ডাকবাক্সের সংখ্যাও কমে গেছে। জানা যায় বর্তমানে সারাদেশেই রয়েছে ৯ হাজার ৮৮৬টি ডাকঘর। এর মধ্যে বিভাগীয় ডাকঘরের সংখ্যা- ১ হাজার ৪২৬ ও অবিভাগীয় ডাকঘরের সংখ্যা ৮ হাজার ৪৬০টি যেখানে কর্মরত ৩৯ হাজার ৯০৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। আবার বিভাগীয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ১৬ হাজার ৮৮৬ ও ভাতা প্রাপ্ত বা অবিভাগীয় কর্মচারীর সংখ্যা- ২৩ হাজার ২১জন। অবিভাগীয় ডাক কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল একটি জাতীয় স্কেল দেওয়া হয়। কিন্তু তাদের যেন তা পুরন হয়নি। তাই আশার প্রদীপ এখন সবার কাছেই নিভু নিভু। কালের পরিক্রমায় মোবাইল ফোন আর বহু যান্ত্রিক যোগাযোগের উন্নতির কারণে যে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী এই চিঠি লিখন পদ্ধতি। হাতের লেখা চিঠির প্রচলন বর্তমানে না থাকলেও এখনো বহু মানুষ, পুরনো চিঠি পড়ে স্মৃতি রোমান্থন করে, খুঁজে পেতে চায় আপন মানুষ গুলোর হার্দিক স্পর্শ। ব্যক্তিগত অনুভূতি মিশানো চিঠি গুলোতে থাকতো মনের গহীনে লুকানো ভাবাবেগ, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা বা আনন্দ বেদনার সাবলীল প্রকাশ যা অন্য কোন মাধ্যমেই এই ভাবে বলা হয়ে উঠেনা বা ব্যক্ত করা সম্ভব না। পুরনো মানুষের চিঠি লেখা হয় না এখন কারো কাছে। চিঠির যুগ বদলে এসেছে- ইমো, ই-মেইল, এসএমএস, হোয়াটসঅ্যাপ, ফেইসবুক, টুইটারসহ নানা ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সব শ্রেণীর মানুষ প্রয়োজনের তাগিদেই যেন- 'মুঠোফোন' ব্যবহার করছে। তাছাড়াও ইন্টারনেট, চ্যাট, ই-মেইল, এসএমএস কিংবা ফেসবুকের মতোই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আর কাগজ-কলমে হাতে লিখে চিঠি আদানপ্রদান করছেনা।
মানুষের আবেগ কেড়ে নিয়েছে এমন প্রযুক্তির ব্যবহার, মানুষও আজকে আন্তরিকতা হারিয়ে অনেকটা যান্ত্রিক হয়ে গেছে। অবশ্যই প্রযুক্তির ভালো দিক যেমন রয়েছে তেমন খারাপ দিকটা লক্ষণীয়। তাই আমাদেরকেই ভাল দিকটা বেছে নিতে হবে। তাহলেই যেন এ দেশের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী চিঠির সুনাম বিদ্যমান থাকবে। আর দুঃখজনকহলেও সত্য যে বেশিরভাগ ডাকঘরের অবস্থা করুণ। জনবলের অভাবে, ভাঙা চেয়ার ও টেবিল এবং জরাজীর্ণ কাঠের বাক্স ও আলমারি। বর্তমানে সরকারি আসবাবপত্রের বরাদ্দ হলেও তা উপজেলা কিংবা শাখা পর্যায়ের ডাকঘরগুলোতে যেন পৌঁছে না। দেখা যায় যে কোনো কোনো ডাকঘরে যেন প্রয়োজনীয় আলমারি না থাকাতেই অফিসের নথিপত্র যেখানে-সেখানে অরক্ষিত ভাবে ফেলে রাখায় তা নষ্ট হচ্ছে। আহা! সে দিনের সেই চিঠির ভাষা হতো ঠিক এমন- "এলাহী ভরসা"। সম্বোধন করতো এমনভাবে,'পাকজনাবেষু ভাইজান, আমার শত কোটি সালাম গ্রহণ করিবেন। সকলকেই আমার সালাম এবং ভালবাসা পৌঁছাইয়া দিবেন। পর সমাচার এই যে', ইত্যাদি ইত্যাদি। আবার চিঠি নিয়ে কতো গান শুনা যেত এখন আর শুনা যায় না। রেডিও টেলিভিশনে শুনা যেত বিদেশ গিয়ে বন্ধু তুমি আমায় ভুইলো না চিঠি দিও পত্র দিও জানাও ঠিকানারে।
✉📧📨📩
লেখক:
নজরুল ইসলাম তোফা: টিভি ও মঞ্চ অভিনেতা, চিত্রশিল্পী, সাংবাদিক, কলামিষ্ট এবং প্রভাষক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

৫২’র ভাষা শহীদদের জীবনী : রফিক, সালাম, জব্বার, বরকত, শফিউর | আমাদের শিল্পসাহিত্য

শহীদ রফিক উদ্দিন আহমদ শহীদ রফিক উদ্দিন আহমদ এর জন্ম ১৯২৬ সালের ৩০ অক্টোবর। গ্রামের নাম-পারিল (বতর্মানে যার নামকরন করা হয়েছে রফিকনগর), থানা- সিংগাইর, জেলা- মানিকগঞ্জ। তার পিতার নাম- আব্দুল লতিফ, মাতার নাম- রাফিজা খাতুন। ৫ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে রফিক উদ্দিন আহমদ ছিলেন ভাইদের মধ্যে সবার বড়। তিনি মানিকগঞ্জ বায়রা কলেজ থেকে ১৯৪৯ সালে ম্যাট্রিক পাশ করেন। মানিকগঞ্জ দেবেন্দ্রনাথ কলেজে আই কম পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। কলেজের পাঠ ত্যাগ করে ঢাকায় এসে পিতার সঙ্গে প্রেস পরিচালনায় যোগ দেন। ২১শে ফেব্রুয়ারীতে শাসকগোষ্ঠীর জারীকৃত ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে যে বিক্ষোভ মিছিল হয় সেখানে তিনি অংশগ্রহন করেন।পুলিশের বেদম লাঠিচার্জ ও কাদানে গ্যাসের কারনে অন্যান্যদের সাথে তিনিও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ছেড়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেলে আশ্রয়গ্রহন করতে যান। এ সময়ে পুলিশের একটু গুলী সরাসরি তার মাথায় আঘাত হানে ও তিনি সাথে সাথেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। সম্ভবত ২১শে ফেব্রুয়ারীর প্রথম শহীদ হওয়ার মর্যাদা রফিক উদ্দিন আহমদই লাভ করেন। তাকে আজিমপুর গোরস্থানে দাফন করা হয়। তবে দুঃখজনকভাবে পরবর্তীতে তার কবর চিহ্নিত করা সম্ভব হয় নি। শহীদ আব্দ...

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন নিয়োগ পরীক্ষার পদ্ধতি, যোগ্যতা এবং প্রস্তুতি জেনে নিন এক নজরে

✍️অনেকটা বিসিএসের আদলে নেয়া হয় এই নিয়োগ পরীক্ষাটি। 📌সারাদেশে নিম্ন-মাধ্যমিক, মাধ্যমিক, কলেজ, মাদ্রাসা এবং কারিগরিসহ  প্রায় ৩৬ হাজার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ আবশ্যক।  📌আর সেই লক্ষ্যে ২০০৫ সাল থেকে সরকার কর্তৃক এনটিআরসিএ (NTRCA) বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগের জন্য বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন নিয়োগ পরীক্ষা চালু করেছে। 📌দেশের কোন বেসরকারি বিদ্যালয় বা কলেজে এই নিবন্ধন ছাড়া চাকরীর কোন সুযোগ নেই। তাই শিক্ষকতায় ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা বাধ্যতামূলক দিতেই হবে। ✍️শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার যোগ্যতাঃ ________________________ 📌শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় কলেজ ও স্কুল পর্যায়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে আপনাকে কমপক্ষে স্নাতক পাস হতে হবে। আর স্কুল পর্যায় -২ এর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে আপনাকে কমপক্ষে এইচএসসি পাস হতে হবে। 📌তবে যারা সদ্য পাস করেছে সেসব প্রার্থীরা সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দেওয়া প্রশংসাপত্র, মার্কশিট, প্রবেশপত্রসহ আবেদন করতে পারবেন। 📌নিবন্ধন পরীক্ষায় আবেদনে...

কবিতার পাণ্ডুলিপি তৈরি করার সেরা কৌশল : জেনে নিন এক নজরে

কবিতা লেখা অনেকেরই শখ। তবে সেই কবিতাগুলো যদি বই হিসেবে প্রকাশ করতে চান, তাহলে প্রয়োজন পাণ্ডুলিপি। অনেকেই কবিতা লিখে রাখেন খাতায়, মোবাইলের নোটে বা ফেসবুকে পোস্ট আকারে। কিন্তু সেগুলো পাণ্ডুলিপিতে রূপ না দেওয়ায় কখনো বই হয়ে ওঠে না। আজ আমরা জানব—   👉 কবিতার পাণ্ডুলিপি কী? 👉 কীভাবে কবিতার পাণ্ডুলিপি তৈরি করবেন?  👉 কবিতার পাণ্ডুলিপির আদর্শ কাঠামো কোনটি? 👉 কবিতার পাণ্ডুলিপি আকর্ষণীয় করার জন্য কার্যকর কিছু কৌশল! ক) কবিতার পাণ্ডুলিপি কী? কবিতার পাণ্ডুলিপি হলো বইয়ের জন্য প্রস্তুত একটি গোছানো খসড়া। এখানে কবিতাগুলো একটি পরিকল্পিত কাঠামো অনুযায়ী সাজানো থাকে, যেন প্রকাশক তা সহজেই বই হিসেবে প্রকাশ করতে পারেন। কবিতার পাণ্ডুলিপিতে থাকে: ভূমিকা বা কবির কথা, উৎসর্গ বা কৃতজ্ঞতা, কবিতাগুলোর ধারাবাহিক ও বিষয়ভিত্তিক বিন্যাস, প্রতিটি কবিতার নির্ভুল নাম ও বানান, শেষে কবির সংক্ষিপ্ত জীবনী। খ) কীভাবে কবিতার পাণ্ডুলিপি তৈরি করবেন? নিচে ধাপে ধাপে পাণ্ডুলিপি তৈরির প্রক্রিয়া দেওয়া হলো: 👉 ধাপ ১: কবিতাগুলো সংগ্রহ ও নির্বাচন: আপনার লেখা সব কবিতা একত্রিত করুন। টাইপ করে একটি ডকুমেন্টে নিয়ে আসুন। মানসম্প...

রহস্য উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি তৈরি করার সেরা কৌশল - জেনে নিন এক নজরে

রহস্য উপন্যাস মানেই পাঠককে একটা অজানা কিছুর পেছনে টেনে নেওয়া। এখানে প্রতিটি চরিত্র সন্দেহভাজন, প্রতিটি ক্লু বিভ্রান্তিকর, আর সমাপ্তি এমন, যা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। আর সেই কাজটি শুরু হয় একটি শক্তিশালী পাণ্ডুলিপি দিয়ে। আজ আমরা জানব— 👉 রহস্য উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি কী 👉 কীভাবে একটি মানসম্পন্ন রহস্য উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি তৈরি করবেন?  👉 আদর্শ রহস্য উপন্যাসের পাণ্ডুলিপির কাঠামো কেমন হওয়া উচিত?  👉 রহস্য উপন্যাসের পাণ্ডুলিপিকে আরও আকর্ষণীয় করার কৌশল! ক) রহস্য উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি কী? রহস্য উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি হলো একটি পূর্ণাঙ্গ, গুছানো ও প্রকাশযোগ্য খসড়া। এখানে একটি রহস্য ধাপে ধাপে উন্মোচিত হয়। এতে কাহিনির সূচনা, ক্লু, সন্দেহভাজন চরিত্র, বিভ্রান্তি, তদন্ত এবং সমাধান—সবকিছু সুনির্দিষ্টভাবে গাঁথা থাকে। পাঠক যেন প্রতিটি পৃষ্ঠা পড়ে একধরনের মানসিক উত্তেজনায় থাকে। খ) কীভাবে একটি মানসম্পন্ন রহস্য উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি তৈরি করবেন? ✅  শুরুতেই রহস্য তৈরি করুন: গল্প শুরুতেই এমন একটি ঘটনার ইঙ্গিত দিন যা পাঠকের কৌতূহল জাগায়। যেমন: সকালবেলা চায়ের কাপের পাশে একটা চিঠি পড়ে ছিল। তাতে লেখা: ‘আমি...

শব্দকথা সাহিত্য পুরস্কার-২০২৫ এর জন্য বই আহ্বান

৩য় বারের মতো শব্দকথা প্রকাশন-এর উদ্যােগে আটটি বিভাগে "শব্দকথা সাহিত্য পুরস্কার-২০২৫" প্রদানের জন্য বই আহ্বান করা হয়েছে।  ✅ বিভাগগুলো হলো: ১। কবিতা ২। উপন্যাস ৩। প্রবন্ধ ও গবেষণা ৪। শিশু-কিশোর সাহিত্য  ৫। সায়েন্স ফিকশন  ৬। ছোটোগল্প  ৭। অনুবাদ সাহিত্য  ৮। আত্মজীবনী, স্মৃতিকথা ও ভ্রমণকাহিনী  ✔️দিনব্যাপী একটি জাকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আটটি বিভাগে নির্বাচিত লেখকগণকে সম্মাননা, ক্রেস্ট, উত্তরীয় এবং সম্মাননাপত্র প্রদান করা হবে। ✔️২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে রচিত মৌলিক গ্রন্থসমূহ প্রতিযোগিতার জন্য বিবেচিত হবে। ✔️প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণেচ্ছুদের বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। ✔বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশিরা এতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। ✔️বই জমা দেওয়ার পর যে কোনো পর্যায়ে অথবা পুরস্কার প্রদানের পর যদি অবগত হওয়া যায় যে, কোনো বই অন্য কোনো বইয়ের অনুকরণ অথবা আংশিক প্রতিরূপে রচিত, সেক্ষেত্রে বইটি বাছাই প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়ার এবং পুরস্কার প্রত্যাহারের অধিকার বিচারকমণ্ডলীর সংরক্ষিত থাকবে। ✔️পুরস্কারের যে কোনো পর্যায়ে বাছাইয়ের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির রচ...

প্রজন্মের জন্য 'চিরকুট' - শাহীদুল আলম | আমাদের শিল্পসাহিত্য

প্রিয়,  দুনিয়ার সকল বাংলা ভাষাভাষী। যাঁরা এই চিরকুট পড়া শুরু করতে যাচ্ছো, যাদের এই লেখা পড়তে কোনো কষ্ট হয়না এমনকি আগামী প্রজন্মের জ্ঞানপিপাসু, অনুসন্ধানী নব তরুণ, যারা মেধা বিকশিত হওয়ার পথে ও ভালোমন্দ বিচার করার সক্ষমতা অর্জন করেছো। যারা সত্যকে জানার জন্য উদগ্রীব থাকে প্রতিনিয়ত, তাদের জানাই সশ্রদ্ধ সালামসহ একরাশ অগ্রিম শুভেচ্ছা ও চিরকুট পড়ার ভুবনে সু-স্বাগতম।  তোমাদের জন্য আমার কিছু কথা ভবিষ্যতের জন্য বলে যেতে চাই, কিছু কথা রেখে যেতে চাই, যে কথাগুলো হবে  তোমাদের জন্য গ্রহণযোগ্য, জীবন চলার পথে শক্তি ও মুক্তি আবার হয়তো  মহাচিন্তার কারণ। তবে জেনে রেখো এটাই সত্য ও বাস্তবতার নিরিখে লেখা অপ্রিয় সত্য বাণীই হবে তোমাদের আগামীর পথচলার, ভবিষ্যৎ গড়ার পথনির্দেশক। যদি এই চিরকুটের কোনো চরণ তোমাদের জীবন চলার পথে এগিয়ে যাওয়ার কারণ কিংবা কাজে এসেছে মনেহয় তাহলেই হবে আমার লিখে যাওয়া চিরকুটের সার্থকতা।  শুরুতে বলতে চাই "চিরকুটটা" সম্পূর্ণ পড়ার মনমানসিকতা ও ধৈর্য ধরে পড়ার চেষ্টা করতে হবে। প্রতিটি লাইন পড়তে হবে দ্রুত পড়তে যেয়ে হয়তো কোনো লাইন বাদ দিয়ে চলে যাবে ফলে মূল বিষয়বস্তু বুঝতে ব...

পাণ্ডুলিপি কী এবং কীভাবে প্রথম বইয়ের পাণ্ডুলিপি তৈরি করবেন?

প্রথম বই প্রকাশ করার স্বপ্ন সব লেখকের মনেই থাকে। কিন্তু সেই স্বপ্নের প্রথম ধাপ হচ্ছে একটি পরিপূর্ণ পাণ্ডুলিপি তৈরি করা। ব্যাপারটি অনেকের কাছে কঠিন ও জটিল মনে হয়। এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি সহজভাবে বুঝতে পারবেন পাণ্ডুলিপি কী, কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ এবং কীভাবে গুছিয়ে তৈরি করবেন আপনার প্রথম বইয়ের পাণ্ডুলিপি।   👉 পাণ্ডুলিপি কী? বই প্রকাশ করার আগে যেটি তৈরি করা হয়, সেটিই পাণ্ডুলিপি। এটি আপনার বইয়ের একটি পূর্ণাঙ্গ খসড়া। এটি হতে পারে হাতে লেখা অথবা টাইপ করা। তবে ডিজিটাল এই যুগে টাইপ করা পাণ্ডুলিপি বেশি গ্রহণযোগ্য। পাণ্ডুলিপিতে বইয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত লেখা থাকে, অধ্যায়/পর্ব/অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সাজানো থাকে, লেখকের ধারণা অনুযায়ী নাম, ভূমিকা, উৎসর্গ, সূচিপত্র ইত্যাদি থাকে। পাণ্ডুলিপিই প্রকাশকের হাতে যায় বই প্রকাশের জন্য। এটি প্রকাশযোগ্য কিনা, তা বিচার হয় এই পাণ্ডুলিপির ভিত্তিতেই।  👉 কীভাবে পাণ্ডুলিপি তৈরি করবেন? প্রথমবারের মতো পাণ্ডুলিপি বানাতে গিয়ে ভয় পাওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু কাজটি একদমই কঠিন নয়, যদি আপনি নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করেন: ১. লক্ষ্য নির্ধারণ করুন (আপনি কী লিখতে চান): প্র...

বিশেষ কাহিনী চিত্র ❝প্রেম বলে কিছু নেই❞ দেখতে চোখ রাখুন এসএটিভি'র পর্দায়

কাজী সাইফ আহমেদের নির্মাণে ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিশেষ কাহিনী চিত্র ❝প্রেম বলে কিছু নেই❞ দেখবেন ঈদের ৬ষ্ঠ দিন রাত ৮:টায়। রচনা: পাভেল ইসলাম   অভিনয়ে:  গোলাম কিবরিয়া তানভীর, মাফতোহা জান্নাত জীম, পাভেল ইসলাম, সঞ্জয় রাজ প্রমুখ। চিত্রগ্রহণ ও সম্পাদনায় : সোহাগ খান এসকে                 ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক: জাহিদ হাসান আনন               নির্বাহী প্রযোজক : ফাল্গুনী মুখার্জী  প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান :  অরোরা অ্যাড মিডিয়া                      একটি শঙ্খচিল এন্টারটেইনমেন্ট নির্মাণ   ।           

আর্টলিট পাণ্ডুলিপি পুরস্কার ২০২৪-এর জন্য পাণ্ডুলিপি আহ্বান

আর্টলিট পাবলিকেশন আয়োজন করছে 'আর্টলিট পাণ্ডুলিপি পুরস্কার ২০২৪'। সারাদেশের যেকোনো লেখক যেকোনো বিষয়ের পাণ্ডুলিপি জমা দিতে পারবেন। পুরস্কার হিসেবে বিজয়ী পাণ্ডুলিপির সেরা ১০ লেখক পাবেন অগ্রিম রয়্যালিটি, বইয়ের সৌজন্য কপি-সহ নানান সুবিধা। এছাড়া নির্বাচিত ৩০ পাণ্ডুলিপির লেখকরা পাচ্ছেন বই প্রকাশে বিশেষ সুযোগ! 👉 প্রতিযোগিতার নিয়মাবলি:> > ১. পাণ্ডুলিপিটি হতে হবে মৌলিক ও অপ্রকাশিত। ২. লেখক চাইলে যেকোনো ক্যাটাগরির যেকোনো বিভাগে যেকোনো সংখ্যক পাণ্ডুলিপি পাঠাতে পারবেন। ৩. সকল বিভাগের পাণ্ডুলিপির শব্দসংখ্যা উন্মুক্ত।  ৪. গুছিয়ে পাণ্ডুলিপিটি পাঠাতে হবে। যেমন: বইয়ের নাম, লেখক নাম, ফ্ল্যাপ, উৎসর্গ, সূচিপত্র, পৃষ্ঠাসংখ্যা, লেখার শিরোনাম, কনটেন্ট ইত্যাদি প্রয়োজনীয় সকল বিষয় থাকতে হবে। ৫. পাণ্ডুলিপির সাথে লেখকের ছবি, সংক্ষিপ্ত পরিচয়, প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা, মোবাইল নাম্বার, ইমেইল অ্যাড্রেস পাঠাতে হবে। ৬. পাণ্ডুলিপি পাঠানোর সময় ইমেইলের সাব্জেক্টের ঘরে ক্যাটাগরি ও বিভাগের নাম উল্লেখ করতে হবে। ৭. পাণ্ডুলিপি SutonnyMJ অথবা ইউনিকোড ফন্টে কম্পোজ করে পাঠাতে হবে। ৮. পাণ্ডুলিপি পাঠানোর ইমেইল ঠিকানা: ar...

আসছে বিজয় দিবসে দেশাত্মবোধক নাটক ‘পতাকা'

নতুন প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত এবং নাগরিক ইট-পাথরের ব্যস্ত শহরে মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ মাতৃকার প্রতি ভালোবাসার আকুতি কতটুকু এমন প্রশ্নকে উপজীব্য করে নির্মিত হয়েছে নাটক 'পতাকা’। রুদ্র মাহফুজের রচনা ও কাজী সাইফ আহমেদের পরিচালনায় বিজয় দিবসের বিশেষ এই নাটকটির প্রধান দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন তরুণ প্রতিভবান অভিনেতা তৌসিফ মাহবুব ও মডেল অভিনেত্রী সাফা কবির। সম্প্রতি উত্তরা, ৩০০ ফিট, শাহবাগ সহ ঢাকার বেশ কয়েকটি লোকেশনে নাটকটির দৃশ্যায়ন সম্পন্ন হয়েছে। নাটক প্রসঙ্গে তৌসিফ বলেন,‘শরাফত নামের যে চরিত্রটি আমি করেছি সে নদীভাঙা এক হতভাগ্য। কাজের সন্ধানে সে ঢাকায় এসে মৌসুমী পণ্যের হকারে পরিণত হয়। এক পর্যায়ে সে পতাকা বিক্রি শুরু করে এবং ঘটনা ক্রমে লক্ষ্য করে বিপন্ন-পরাস্ত দেশপ্রেমকে। একই প্রসঙ্গে সাফা কবির বলেন,‘প্রথমেই বলবো, এটি গতানুগতিক কোনো গল্পের নাটক নয়। গতানুগতিক ধারা থেকে বের হয়েছি এবং নিজেকে ভাঙতে পারলাম এই প্রথম। নাটকটি শৈল্পিক অভিমুখতায় নতুন পথ খুঁজে পেয়েছে। বিশেষ করে পরিচালক সাইফ ভাইয়ের ইউনিট ছিল অসাধারন। সবাই ছিল খুব বেশি কো-অপারেটিভ। তরুণ নির্দেশক কাজী স...